বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ



বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ



১৬৬. বার্খান কী?


উঃ অর্ধ-চন্দ্রাকৃতি বালিয়ারিকে বার্খান বলে।

১৬৭. সিফ্ বালিয়াড়ির করিডরকে কী বলে? সাহারা মরুভূমিতে এই বালিয়াড়ির নাম কী?

উঃ রেগ বা হামাদা বলে। সাহারা মরুভূমিতে এই বালিয়াড়ির নাম গাসি।

১৬৮. লোয়েশ সমভূমি কাকে বলে?

উঃ হলুদ ও ধূসর বর্ণের অতি সূক্ষ্ম খনিজ সমৃদ্ধ পলি ও বালুকণার সঞ্চয়কে লোয়েস বলে। বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে লোয়েস একস্থান থেকে অন্যস্থানে বাহিত হয়ে সঞ্চিত হয়। লোয়েস সঞ্চয়ের ফলে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে লোয়েস সমভূমি বলে।

১৬৯. ওয়াদি কী?

উঃ মরুভূমিতে বৃষ্টির সময়ে নদীগুলি সক্রিয় থাকে।সক্রিয় অবস্থায় নদীগুলি দ্রুত ক্ষয় করে দ্রুত নদীখাত সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন বৃষ্টিহীনতার সময় নদীর জন বাষ্পীভবন ও অনুপ্রবেশের ফলে শুকিয়ে যায়। তখন নদীখাত শুষ্ক অবস্থায় থাকে। এই গভীর শুষ্ক নদীখাতকে ওয়াদি বলে।

১৭০. পেডিমেণ্ট কী?

উঃ মরু অঞ্চলে উচ্চভূমির সম্মুখভাগ থেকে পাদদেশ পর্যন্ত মৃদু ঢালযুক্ত যে ভূমিরূপ দেখা যায় তাকে পেডিমেন্ট বলে।

১৭১. বাজাদা কাকে বলে?

উঃ মরুভূমিতে পাহাড় দিয়ে ঘেরা অবনত অংশে পলি সঞ্চিত হয়ে যে স্বল্প ঢালযুক্ত সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে বাজাদা বলে।

১৭২. বোলসন কাকে বলে?

উঃ মরুভূমি অঞ্চলে পর্বত বেষ্টিত অবনত ভূমি বা বেসিন দেখা যায়। এই বেসিনকে বোলসন বলে।

১৭৩. প্লায়া কাকে বলে?

উঃ মরুভূমি অঞ্চলে বেসিনের চারপাশের পর্বতগুলিতে নদীর জল কেন্দ্রমুখী প্রবাহের কারণে অবনত অংশে (বেসিনে) জমা হয়। এর ফলে যে হ্রদ সৃষ্টি হয় তাকে প্লায়া বলে।

১৭৪. শটস্ কী?

উঃ উত্তর আফ্রিকায় লবণাক্ত প্লায়া হ্রদকে শটস্ বলে।

১৭৫. স্যালিনাস্ কী?

উঃ প্লায়ার জল সম্পূর্ণ বাষ্পীভূত হলে হ্রদের তলদেশে লবণের স্তর দেখা যায়, একে স্যালিনাস্ বলে।

১৭৬. মরুকরণ কী?

উঃ পৃথিবীর মরুভূমি সমূহের প্রান্তদেশে অবস্থিত শুষ্ক ও অর্ধ-শুষ্ক অঞ্চল ক্রমশ মরুভূমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। কোনও ভূমির এইভাবে মরুভূমিতে রূপান্তরকে মরুকরণ বলে।

১৭৭. মরুকরণ প্রতিরোধের উপায়গুলি কী কী?

উঃ মরুকরণ প্রতিরোধের উপায়গুলি হল-

১) মরুভূমির প্রান্তভাগে বনসৃজন করে বালির অগ্রসর হওয়া রোধ করা,

২) মরু পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বৃক্ষছেদন নিষিদ্ধ করা,

৩) জালি ও জাঙ্গল উদ্ভিদের সাহায্যে অসংবদ্ধ বালিকে সুস্থিত করা,

৪) যথেচ্ছ পশুচারণ বন্ধ করা প্রয়োজন,

৫) মরুকরণ বিষয়ে জনচেতনা গড়ে তোলা উচিৎ।


১৭৮. পর্বতের পাদদেশে যে হিমবাহ দেখা যায় তাকে কী বলে?

উঃ পাদদেশীয় হিমবাহ বলে।

১৭৯. কী সঞ্চয়ের ফলে এসকার তৈরি হয়?

উঃ হিমবাহের বয়ে নিয়ে আসা নুড়ি, শিলাখণ্ড, কাদা প্রভৃতি সঞ্চয়ের ফলে।

১৮০. লোয়েস সমভূমি বায়ুর কোন কার্যের ফলে সৃষ্টি হয়?

উঃ সঞ্চয় কার্যের ফলে।


১৮১. অতি গভীর ও সংকীর্ণ গিরিখাতের নাম কী?

উঃ ক্যানিয়ন।

১৮২. পার্বত্য হিমবাহ অঞ্চলে কোন হ্রদ দেখা যায়?

উঃ করি হ্রদ।

১৮৩. মরুভূমির আর্দ্র অঞ্চলকে কী বলে?

উঃ প্লায়া।

১৮৪. পেডিমেন্টের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উঃ পেডিমেন্টের দুইটি বৈশিষ্ট্য হল-

১) কম ঢাল হয়,

২) কঠিন শিলার উপর পলির হালকা স্তর থাকে,

৩) উচ্চ অংশ এবং বাজাদার মধ্যবর্তী স্থানে সমতল ভূমিরূপে অবস্থান করে।

১৮৫. করি হ্রদ ও প্লায়া হ্রদের পার্থক্য কী?

উঃ করি হ্রদ ও প্লায়া হ্রদের পার্থক্যগুলি হল-

১) করি হ্রদ হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট হয়, প্লায়া হ্রদ বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট হয়।

২) করি হ্রদ উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে দেখা যায়, প্লায়া হ্রদ মরুঅঞ্চলে দেখা যায়।

১৮৬. পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ উপত্যকা ও নদী উপত্যকার আকৃতি কী হয়?

উঃ হিমবাহ উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি ‘U’ অক্ষরের মত, নদী উপত্যকার আকৃতি ইংরেজি ‘I’ এবং ‘V’ অক্ষরের মত হয়।

১৮৭. বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ব্যাঙের ছাতার মত আকৃতি বিশিষ্ট ভূমিরূপকে কী বলে?

উঃ গৌর।

১৮৮. রাজস্থানের মরুঅঞ্চলের চলমান বালিয়াড়িকে কী বলে?

উঃ ধ্রিয়ান।

১৮৯. পৃথিবীর কোথায় লোয়েস সমভূমি দেখা যায়?

উঃ হোয়াংহো নদীর অববাহিকায়।

১৯০. হিমবাহ গলিত জল করিতে জমা হলে তাকে কী বলে?

উঃ করি হ্রদ।

১৯১. হিমবাহের দুপাশে যখন পাহাড়, নুড়ি ইত্যাদি সঞ্চিত হয় তখন তাকে কী বলে?

উঃ পার্শ্ব গ্রাবরেখা।

১৯২. তির্যক বালিয়াড়ির আর এক নাম কী?

উঃ বার্খান।

১৯৩. পৃথিবীর উচ্চতম বালিয়াড়ি কোথায় অবস্থিত?

উঃ উত্তর আফ্রিকার আলজিরিয়ায় অবস্থিত।

১৯৪. বায়ু বাহিত পলি নিম্নভূমিতে সঞ্চিত হয়ে যে সমতলভূমির সৃষ্টি করে তাকে কী বলে?

উঃ লোয়েস সমভূমি।

১৯৫. হিমরেখা কী?

উঃ পর্বতের গায়ে যে সীমারেখার ওপর সারাবছর তুষার বা বরফ জমে থাকে তাকে হিমরেখা বলে।

১৯৬. হিমশৈল কাকে বলে?

উঃ সমুদ্রে ভাসমান বিশাল আকৃতি বরফের স্তূপকে বলে হিমশৈল।

১৯৭. হিমবাহ বলতে কী বোঝ?

উঃ স্থলভাগের তুষার ও জমাট বাঁধা কঠিন বরফের স্তূপ যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ধীরগতিতে উচ্চভূমি থেকে নিম্নভূমিতে নেমে আসে তখন তাকে বলে হিমবাহ।

১৯৮. বার্খান কী?

উঃ যেসব বালিয়াড়ি প্রবহমান বায়ুর গতিপথের সঙ্গে আড়াআড়ি ভাবে একেবারে আধখানা চাঁদের মত গড়ে ওঠে সেগুলিকে বলে বার্খান।

১৯৯. লোয়েস সমভূমির একটি উদাহরণ দাও।

উঃ চীনের উত্তরাংশে অবস্থিত হোয়াংহো অববাহিকার মধ্যভাগে লোয়েস সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে।

২০০. হামাদা কী?

উঃ কোন কোন সময় মরুভূমির যেসব স্থান বন্ধুর ও শিলাগঠিত বা পাথুরে সেখানে বায়ুপ্রবাহ অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় ক্ষয়কার্যের জন্য স্থানটি সমতল ও মসৃণাকার ধারণ করে। সাহারা মরুভূমিতে এই ধরনের শিলাগঠিত সমতলভূমিকে হামাদা বলে।

২০১. ইনসেল বার্জ কী?

উঃ অনেক সময় প্রায় সমতল মরুভূমির মধ্যে স্বল্প উচ্চতা বিশিষ্ট কিছু টিলাকে বিক্ষিপ্ত ভাবে অবস্থান করতে দেখা যায়, এগুলিকে বলে ইনসেল বার্জ।

২০২. হিমবাহ সৃষ্ট উপত্যকার আকৃতি কেমন হয়?

উঃ ইংরেজি অক্ষর ‘U’ এর মত হয়।

২০৩. কোন কোন অঞ্চলে বালিয়াড়ি দেখা যায়?

উঃ উষ্ণ মরু অঞ্চলে, শুষ্ক অঞ্চলে এবং সমুদ্র উপকূলে।

২০৪. বায়ু কয়টি পদ্ধতিতে ক্ষয়কার্য করে?

উঃ তিনটি পদ্ধটিতে। ক্ষয়সাধন, অপসারণ এবং অবক্ষেপণ।

২০৫. বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট কয়েকটি ভূমিরূপের নাম লেখ।

উঃ গৌর, জিউগেন, ইনসেল বার্জ, ইয়ার্দাঙ প্রভৃতি।

২০৬. ভারতের কোথায় ধান্দ দেখা যায়?

উঃ রাজস্থানের মরুঅঞ্চলে।

২০৭. বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট কয়েকটি ভূমিরূপের নাম লেখ।

উঃ বালিয়াড়ি, বার্খান।

২০৮. ভারতের বৃহত্তম হিমবাহের নাম কী?

উঃ সিয়াচেন।

২০৯. পৃথিবীর দ্রুততম হিমবাহের নাম কী?

উঃ গ্রীনল্যান্ডের জ্যাকোভসাভোঁ ইসব্রে।

২১০. পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহের নাম কী?

উঃ ল্যামবার্ট।

২১১. হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট কয়েকটি ভূমিরূপের নাম লেখ।

উঃ গ্রাবরেখা, কেম, এসকার, ড্রামলিন।

২১২. হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট কয়েকটি ভূমিরূপের নাম লেখ।

উঃ U আকৃতির উপত্যকা, করি বা সার্ক, ঝুলন্ত উপত্যকা প্রভৃতি।

২১৩. রসে মোতানে কিভাবে সৃষ্টি হয়?

উঃ হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট হয়।

২১৪. ক্র্যাগ অ্যান্ড টেল কিভাবে সৃষ্টি হয়?

উঃ হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট হয়।

২১৫. কাবেরী নদীর উপর স্থাপিত জলপ্রপাতটির নাম কী?

উঃ শিবসমুদ্রম জলপ্রপাত ।






Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.