HISTORY GENERAL
Paper: GE/CC-4
2022
Full Marks: 65
বিভাগ - ক
১। নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো:
(ক) রবার্ট ক্লাইভ কে ছিলেন?
Ans. রবার্ট ক্লাইভ ছিলেন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাপতি এবং ব্রিটিশ উপনিবেশবাদী। পলাশীর যুদ্ধে তার নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাদল বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার সৈন্যদলকে পরাজিত করে।
(খ) এলাহাবাদের সন্ধি কবে ও কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?
Ans. এলাহাবাদের সন্ধি মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আলমগীরের ছেলে সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রবার্ট ক্লাইভের মধ্যে ১৭৬৫ সালের ১৬ আগস্টে স্বাক্ষরিত হয়।
(গ) সূর্যাস্ত আইন কাকে বলে?
Ans. সূর্যাস্ত আইন লর্ড কর্নওয়ালিস ১৭৯৩ সালের ২২ মার্চ চালু করেন। ১৭৯৩ সালের ১৪ নং রেগুলেশনে বিধান করা হয়েছিল যে, রাজস্ব পরিশোধে অক্ষম জমিদারদের জমি প্রকাশ্য নিলামে বিক্রয় করে জমিদারদের বকেয়া রাজস্ব আদায় করা হবে ।
(ঘ) ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
Ans. 1800 সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা হয় ।
(ঙ) বেসিনের সন্ধি কবে ও কাদের মধ্যে হয়?
Ans. বাসেইনের চুক্তিটি ছিল ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং মারাঠা কনফেডারেসির পেশোয়া দ্বিতীয় বাজি রাওয়ের মধ্যে একটি চুক্তি , এটি 31 ডিসেম্বর 1802 সালে পুনা যুদ্ধের পরে, বর্তমান বাসেই (ভাসাই) এ স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
(চ) অমৃতসর সন্ধির স্বাক্ষরকারী কারা ছিলেন?
Ans.অমৃতসরের চুক্তিটি ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং শিখ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাকারী শিখ নেতা মহারাজা রঞ্জিত সিং-এর মধ্যে একটি চুক্তি।
(ছ) হিন্দু কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
Ans. ডেভিড হেয়ার এবং আলেকজান্ডার ডাফের সহযোগিতায়, রাজা রামমোহন রায় 1817 সালে কলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
(জ) কলিকাতা মেডিকেল কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
Ans. ব্রিটিশ রাজের সময়কালে, লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক 1835 সালের 28শে জানুয়ারি বাংলার মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
(ঝ) তিতুমীর কে ছিলেন?
Ans. তিতুমীর ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিরোধী ব্যক্তিত্ব। তিনি বাঙ্গালা আমিরাত নামক স্বল্পস্থায়ী রাষ্ট্রের বাদশাহ ছিলেন।
(ঞ) ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময় মুঘল সম্রাট কে ছিলেন?
Ans. ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময় মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ ছিলেন।
(ট) কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
Ans. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় 24 জানুয়ারি, 1857 সালে ।
(ঠ) বঙ্গ বিভাজন কবে রদ হয়?
Ans. ১৯১১ সালে
(ড) বাংলার দুটি গুপ্ত সমিতির নাম উল্লেখ করো।
Ans. অনুশীলন সমিতি, যুগান্তর দল।
(ঢ) মুসলিম লীগ কবে স্থাপিত হয়?
Ans. ১৯০৬ সালে
(ণ) 'ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া' (Discovery of India) গ্রন্থের লেখক কে?
Ans. জহরলাল নেহেরু।
বিভাগ খ
২। যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর লেখো:
(ক) তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধের কারণ কী ছিল?
Ans. ১৭৫৯ সালে আহম্মদ শাহ আবদালি পাঞ্জাব দখল করে দিল্লির পথে অগ্রসর হন। অযোধ্যার নবাব সুজা-উদ-দৌলা ও বুন্দেলখণ্ডের রোহিলা সর্দার নাজিব খান আবদালির পক্ষে যোগ দেন। মারাঠা শোষণের বিরুদ্ধে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ নিয়ে রাজপুত, শিখ ও জাঠরা এই সংকটের দিনে মারাঠাদের থেকে দূরে থাকে। মারাঠা সর্দারদের মধ্যেকার কলহ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে। নিঃসঙ্গ পেশোয়া তাঁর নাবালক পুত্র বিশ্বাস রাও ও জ্ঞাতিভ্রাতা সদাশিব রাও-এর নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী উত্তর ভারতে প্রেরণ করেন। ১৭৬১ সালের ১৪ জানুয়ারি পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে মারাঠারা পরাজিত হয়। বিশ্বাস রাও ও সদাশিব রাও ছাড়াও বেশ কয়েকজন মারাঠা সেনাপতি যুদ্ধে নিহত হন।
(খ) বাংলায় কে এবং কেন দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন?
Ana. রবার্ট ক্লাইভ, মীরজাফরের মৃত্যুর পর লর্ড ক্লাইভ ১৭৬৫ সালে মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে। এ সময় কিছু শর্ত সাপেক্ষে মীরজাফরের পুত্র নাজিম-উদ-দৌলাকে বাংলার সিংহাসনে বসানো হয়। শর্ত মোতাবেক নাজিম-উদ-দৌলা তাঁর পিতা মীর জাফরের ন্যায় ইংরেজদের বিনা শুল্কে অবাধ বাণিজ্য করার সুযোগ দেবেন এবং দেশীয় বণিকদের অবাধ বাণিজ্যের সুবিধা বাতিল করবেন। এই ব্যবস্থার ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রচুর অর্থনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠে এবং বাংলার নবাব সামান্য বৃত্তিভোগী কর্মচারীতে পরিণত হন।
(গ) 'পলাশি লুণ্ঠন' কাকে বলে?
Ans. পলাশীর যুদ্ধে জয়লাভের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের অর্থ ও সম্পদকে দু - হাত ভরে ভারত থেকে নিজের দেশ ইংল্যান্ডে পাচার করেছিল । বিদেশি ইংরেজরা সােনা, রুপা বা কোনাে পণ্যসামগ্রীর বিনিময়ে এই সম্পদের নির্গমন ঘটায়নি, তাই এই ঘটনাকে অনেকে লুণ্ঠন বলে উল্লেখ করেছেন ।
(ঘ) রায়তওয়ারি ও মহলওয়ারি বন্দোবস্ত বলতে কী বোঝো?
Ans. রায়তওয়ারী'
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ত্রুটিগুলি সম্পর্কে কোম্পানি সচেতন হয়। নতুন করে ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। এর ফলস্বরূপ উদ্ভূত হয় রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত যার দ্বারা কৃষকের সঙ্গে সরকারের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ স্থাপিত হয়। রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত অনুযায়ী রায়তের সঙ্গে কোম্পানির জমি জরিপের ভিত্তিতে রাজস্ব ধার্য করা হয়।
মহলওয়ারী
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে উত্তর-পশ্চিম ভারতে কোম্পানির আধিপত্য বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে নতুন ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা মহলওয়ারি ব্যবস্থা নামে পরিচিত। এই ব্যবস্থায় এক একটি গ্রাম বা মহলের সঙ্গে রাজস্ব ব্যবস্থা করা হয়। গ্রামের যিনি প্রধান বলে বিবেচিত হতেন তাঁর কাছে গ্রামবাসীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব জমা দিতেন এবং প্রধান এই রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দিতেন। প্রতি মহল বা গ্রামের সঙ্গে সাধারণভাবে ত্রিশ বছরের রাজস্ব বন্দোবস্ত করা হত। জমি জরিপের মাধ্যমে জমির উৎপাদন শক্তি অনুযায়ী ভূমিরাজস্বের হার নির্ধারণ করা হত।
(ঙ) নব্যবঙ্গের উপর সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।
Ans. উনিশ শতকে বাংলাদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষাপ্রসারের সূত্রে বিভিন্ন ধারায় সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এর একটি ধারা ছিল দেশের প্রচলিত ধর্ম, সমাজ, সংস্কৃতি ইত্যাদিকে অস্বীকার করে পাশ্চাত্যের ভাবধারায় নতুন সমাজ গঠন করা। হিন্দু কলেজের একদল নব্য যুবক এই উগ্রপন্থী আন্দোলনের সূচনা করেন। এই গোষ্ঠী ইতিহাসে নব্যবঙ্গ বা Young Bengal নামে পরিচিত। নববঙ্গ গোষ্ঠীর প্রাণপুরুষ ছিলেন হিন্দু কলেজের ফিরিঙ্গী অধ্যাপক হেনরী ভিভিয়ান ডিরোজিও। এই কারণে নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর সদস্যরা 'ডিরোজিয়ানস' নামে অভিহিত হন।
(চ) রাওলাট সত্যাগ্রহের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করো।
Ans. রাওলাট সত্যাগ্রহ সফল হয়নি। কারণ রাওলাট আইন প্রত্যাহৃত বা সংশোধিত হবার আগেই আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়েছিল। দেশের সমস্ত অংশে এই আন্দোলনের আবেদন পৌঁছায়নি। আন্দোলন সীমাবদ্ধ ছিল মূলত বোম্বাই, পাঞ্জাব ও আমেদাবাদে। বাংলাদেশে শহর কলিকাতার বাইরে আন্দোলনের কোন রেশ ছিল না। স্বভাবতই রাওলাট সত্যাগ্রহকে প্রকৃত সর্বভারতীয় আন্দোলন বলা যায় না। তথাপি এই আন্দোলন সুদূরপ্রসারী ফলে সমৃদ্ধ ছিল। এই ঘটনা "দেশের মানুষের কাছে সভ্যতা ও সাম্রাজ্যবাদের মুখোশধারী বিদেশী শাসনের কদর্য ও ভয়াবহ রূপটি উদ্ঘাটিত করেছিল।” বিশ্বকবি 'নাইট' উপাধি বর্জন প্রসঙ্গে লিখেছিলেন, "আমরা একটা সীমাহীন অপমানজনক পরিস্থিতির মধ্যে পতিত রয়েছি। আমি সকল সামাজিক মর্যাদামুক্ত হয়ে দেশবাসীর পাশে দাঁড়াতে চাই।”
(ছ) ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন সম্পর্কে আলোচনা করো।
Ans. আইন অমান্য আন্দোলন প্রত্যাহৃত হলে ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৫ সালে ভারত শাসন আইন প্রবর্তন করে। ব্রিটিশ ভারতীয় প্রদেশ ও দেশীয় রাজ্যগুলিকে একত্রে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গঠন এবং প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন ছিল এই আইনের মূল দুটি বিষয়। স্থির হয় যে, যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হবে ব্রিটিশ সরকারের প্রত্যক্ষ শাসনের আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের শাসনভার দেওয়া হবে গভর্নর জেনারেল ও একটি মন্ত্রীসভার হাতে। আইনসভার সদস্যদের মধ্যে থেকে গভর্নর জেনারেল মন্ত্রীদের বেছে নেবেন। কেন্দ্রীয় সরকারের শাসনকার্যকে সংরক্ষিত ও হস্তান্তরিত এই দুভাগে ভাগ করা হয়। প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র প্রভৃতির দায়িত্ব থাকে বড়োেলাটের হাতে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়গুলির দায়িত্ব পান মন্ত্রীরা। আইন প্রণয়ণের ক্ষমতা আইনসভাকে দেওয়া হয়। অর্থনৈতিক বিষয়টিও আইনসভার এক্তিয়ারভুক্ত থাকে। কেন্দ্রে দ্বৈতশাসন চালু করা হয়। কোনো বিল গভর্নরের সম্মতি ছাড়া আইনগত মর্যাদা পাবে না ঠিক হয়। প্রয়োজনে অর্ডিন্যান্স জারি করে তিনি আইন তৈরি করতে পারবেন।
(জ) ১৯৪৬ সালের নৌবিদ্রোহ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টাকা লেখো।
Ans. ১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় নৌ-বিদ্রোহ। যুদ্ধজাহাজ তলোয়ার থেকে এই বিদ্রোহের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে ভারতীয় নৌসেনাবাহিনীতে। ভারতীয় নৌসেনাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ, দুর্ব্যবহার জাহাজের রেটিংদের বিদ্রোহে প্ররোচিত করে। এই বিদ্রোহ বিশেষ আকার ধারণ করে যখন সাধারণ মানুষও বিদ্রোহীদের ক্ষোভের কারণগুলির প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠে। রেটিংরা নৌ-ধর্মঘট কমিটি তৈরি করে। বোম্বাইতে তিনলক্ষ মানুষ ধর্মঘটে যোগ দেয়। 22 ফেব্রুয়ারি কংগ্রেস নেতাদের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে বোম্বাইতে পালিত হয় সাধারণ ধর্মঘট। বিদ্রোহী নাবিকদের সমর্থনে কলকাতাতেও পালিত হয় শ্রমিক ধর্মঘট। কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ নৌবিদ্রোহকে পছন্দ করেনি।
বিভাগ গ
(ক) ১৭৫৭-১৭৬৫ সালের মধ্যে বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আধিপত্য বিস্তারের ইতিহাস আলোচনা করো।
Ans.
(খ) বাংলার শিক্ষা ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনে রাজা রামমোহন রায়ের কৃতিত্বের মূল্যায়ন করো।
Ans.
শিক্ষার ক্ষেত্রে রাজা রামমোহন রায় :-
সংস্কারের জন্যে প্রয়োজন শিক্ষার এবং এই বাস্তব প্রয়োজনীয়তা থেকে রামমোহন পাশ্চাত্য যুক্তিবাদী শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছিলেন। ১৮১৭ সালে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে আছে। ১৮২৫ সালে তিনি স্থাপন করেন বেদান্ত কলেজ। ভারতীয় সমাজের সংস্কারের জন্যে প্রয়োজন পাশ্চাত্য যুক্তিবাদী ও বৈজ্ঞানিক শিক্ষা, এই প্রত্যয়ে দৃঢ় ছিলেন তিনি। পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিক শিক্ষা ভারতবর্ষে প্রসারের উদ্দেশ্যে ১৮২৩ সালে লর্ড আর্মহার্স্টকে লেখা রামমোহনের পত্রটি ভারতের যুক্তিবাদী শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে একটি অমূল্য দলিল। পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে ছিলেন রামমোহন। তবে স্ত্রী শিক্ষার বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি খুব স্পষ্ট ছিল না।
সমাজ সংস্কার আন্দোলনে রাজা রামমোহন রায় :-
ধর্মীয় সংস্কর :- রামমোহনের ধর্মীয় সংস্কারের পশ্চাতে অবশ্যই কিছু সামাজিক উদ্দেশ্য ছিল। হিন্দুধর্মের বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান এবং সাধারণ মানুষের শাস্ত্রীয় গ্রন্থে অধিকার হীনতা পুরোহিত শ্রেণীর প্রাধান্য বৃদ্ধি করেছিল যা দায়ী ছিল সামাজিক অবক্ষয়ের জন্যে। রামমোহন বিভিন্নধর্মের গ্রন্থগুলির সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করিয়েছিলেন এবং হিন্দু ধর্মের পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে উপনিষদের একেশ্বরবাদের পক্ষে সায় দিয়েছিলেন ।
ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা :-
খ্রিস্টধর্মের মানবতাবাদী মূল্যবোধগুলির দ্বারা আকৃষ্ট হয়েও মিশনারিগণ কর্তৃক প্রচারিত গোঁড়ামির বিরোধিতা করেছিলেন রামমোহন। রামমোহনের ধর্মভাবনা একটি জাতির অস্তিত্ব অনুসন্ধানের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাই ১৮২৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ব্রাহ্মসমাজ যার উদ্দেশ্য ছিল হিন্দুধর্মের সংস্কার এবং এক বিশ্বধর্মের মাধ্যমে বিশ্বমানবতাবাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। ঐতিহ্যের যুক্তিসঙ্গত অনুসন্ধান মানুষের স্বাভাবিক অধিকার বলে গণ্য হয়েছিল ব্রাহ্মসমাজের কাছে।
সতীদাহ প্রথা রোধ :-
সমাজের বিভিন্ন কোণ থেকে সতীদাহের বিরুদ্ধে মত কখনও কখনও উঠে আসতে থাকে। ১৮১৮ সাল থেকে সতীদাহ প্রথা নিবারণের উদ্দেশ্যে সংবাদপত্রের মাধ্যমে জনমত গঠনে উদ্যোগী হন রামমোহন। সংবাদ কৌমুদী পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে তিনি তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করতে থাকেন। তিনি বড়োলাট লর্ড উইলিয়ম বেন্টিস্কের কাছে আবেদনপত্র জমা দেন । ১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর বেন্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথাকে আইনানুগভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
(গ) ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলি আলোচনা করো।
Ans.
সিপাহীদের ক্ষোভ: সিপাহীদের ক্ষোভের প্রধান কারণ ছিল-(১) তাদের চাকরীর ও সিপাহীদের ক্ষোভ: সিপাহীদের মোড়েরণ এবং (২) তাদের ধর্মবিশ্বাসের ওপর আক্রমণ। ভারতে কোম্পানির রাজনৈতিক অভিসের বেতন ছিল খুব কম।
সামরিক বাহিনীতে বৈষম্য :- সিপাহীদের অসন্তোষের পেছনে ধর্মের ভূমিকা ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দিনে দিনে সিপাহীদের মধ্যে এই ধারণা ঘনীভূত হয়েছিল যে, ইংরেজের প্রধান লক্ষ্য ভারতীয়দের ধর্মনাশ করা এবং তাদের খ্রিস্টানধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা। ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু- সিপাহীদের তিলক-কাটা এবং মুসলমানদের দাড়ি রাখার ওপর ইংরেজ কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা জারির চেষ্টা করে। চামড়ার টুপি পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। এর প্রতিবাদে ভেলোরে সিপাহীদের অভ্যুত্থান ঘটে।
সিপাহিদের প্রতি উদ্ধত ব্যবহার :-
ভারতীয় শাস্ত্র অনুযায়ী কালাপানি বা সাগরপার হওয়া নিষিদ্ধ থাকায় জাতিচ্যুত হওয়ার ভয়ে সাগরপার হতে সিপাহিরা শঙ্কিত বোধ করে। সমুদ্র পার হয়ে ব্রহ্মদেশে যুদ্ধের জন্যে যেতে হওয়ায় তাদের মনে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। সিন্ধু বা পাঞ্জাবে মোতায়েন হলে সিপাহিদের বাট্টা বা বিদেশ ভাতা দেওয়া হত। এই ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হলে সিপাহিরা ক্ষুব্ধ হয়। সামরিক বাহিনীতে নিযুক্ত সিপাহিদের প্রতি উদ্ধত ব্যবহার ও অশালীন ভাষা প্রয়োেগ দৈনন্দিন বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
ভারতীয় সিপাহিদের ধর্মনাশের ধারণা :-
আফগান যুদ্ধে ইংরেজ বাহিনীকে পরাজিত করে। এই অবস্থায় ইংরেজ সরকার সেনাবাহিনীতে এনফিল্ড রাইফেল নামে এক নতুন ধরনের রাইফেল প্রবর্তন করে । যার কার্তুজগুলি দাঁত দিয়ে কেটে রাইফেলে ভরতে হত। কার্তুজের মোড়কে গোরু ও শুয়োরের চর্বি আছে, এমন বার্তা সিপাহিদের মধ্যে রটে যায়। ইংরেজ সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ধর্মনাশ করতে চাইছে এমন ধারণা হিন্দু মুসলমান সিপাহিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে । সর্বস্তরের মানুষের কোম্পানির শাসনের বিরুদ্ধে প্রবল অসন্তোষ সিপাহিদের বিক্ষোভের মধ্যে প্রতিফলিত হয়ে প্রবল অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
মল্যায়ন :-
হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সিপাহীরা সরকারের এই রাইফেল প্রবর্তনের কাজকে ভারতীয়দের ধর্মনাশের গোপন ষড়যন্ত্র হিসেবে বিবেচনা করে এবং তা ব্যবহার করতে অস্বীকার করে। সুতরাং বিদ্রোহের কারণ হিসেবে ধর্মীয় ক্ষোভ ও অসন্তোষের গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না।
(ঘ) ১৮৮৫ সালের জাতীয় কংগ্রেসের উদ্ভবের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।
(ঙ) ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে মহাত্মা গান্ধির উত্থান আলোচনা করো।
(চ) ভারতের সংবিধান সভার কার্যাবলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
2021
4th Sem-History-G/(GE
HISTORY GENERAL
Paper: GE/CC-4
Full Marks: 65
বিভাগ ক
১। নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
(ক) বক্সারের যুদ্ধ কত সালে হয়?
Ans. বক্সারের যুদ্ধ 1764 সালের 22 থেকে 23 অক্টোবরের মধ্যে মেজর হেক্টর মুনরোর নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাহিনী এবং বেনারস রাজ্যের মহারাজা বলওয়ান্ত সিং- এর সম্মিলিত সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল ।
(খ) কে বাংলায় দ্বৈত শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেন?
Ans. রবার্ট ক্লাইভ ভারতে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন ।
(গ) পিটের ভারতশাসন আইন কবে প্রবর্তিত হয়?
Ans. 1784
(ঘ) স্বত্ববিলোপ নীতি কে প্রবর্তন করেন?
Ans. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি ।
(ঙ) ১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন?
Ans. চার্লস জন ক্যানিং
(চ) 'ইন্ডিয়ান ওয়ার অফ ইন্ডিপেনডেন্স' (Indian War of Independence) গ্রন্থটি কে রচনা করেন?
Ans. বিনায়ক দামোদর সাভারকরের বই
(ছ) নব্যবঙ্গ সম্প্রদায় পরিচালিত যে-কোনো একটি পত্রিকার নাম লেখো।
Ans. ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠী
(জ) 'ব্রাহ্মসমাজ' কে প্রতিষ্ঠা করেন?
Ans. রাজা রামমোহন রায় ১৮২৮ সালের ২০শে আগস্ট
(ঝ) রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত কে প্রবর্তন করেন?
Ans. 1819 সালে টমাস মনরো, মাদ্রাজ ও বোম্বাই প্রেসিডেন্সিতে প্রবর্তিত হয়।
(ঞ) সাঁওতাল বিদ্রোহের যে-কোনো একজন নেতার নাম লেখো।
Ans. সিধু ও কানু
(ট) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?
Ans. 1885 ওয়াওমেশ চন্দ্র ব্যানার্জি প্রথম সভাপতি হন।
(ঠ) অসহযোগ আন্দোলন কত সালে প্রত্যাহার করা হয়?
Ans. 1922 সালে চৌরি চৌরার ঘটনার কারণে মহাত্মা গান্ধী এই আন্দোলন প্রত্যাহার করেছিলেন ।
(ড) ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন?
Ans. লর্ড মাউন্টব্যাটেন ছিলেন ভারতের শেষ ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল। লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস ছিলেন বাংলার প্রথম গভর্নর জেনারেল ।
(ঢ) ভারতের গণপরিষদ কবে গঠিত হয়?
Ans. 1946 সালের 9 ডিসেম্বর ।
(ণ) ভারতীয় সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি কে ছিলেন?
Ans. বাবাসাহেব আম্বেদকর ভারতীয় সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। বাবাসাহেব আম্বেদকর, চেয়ারম্যান, একমাত্র ব্যক্তি যিনি ভারতীয় সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ।
বিভাগ খ
২। যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
(ক) তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধের গুরুত্ব নিরূপণ করো।
Ans. পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ 1761 সালে সংঘটিত হয়েছিল এবং এটি ছিল ভারতের একটি বড় সংঘর্ষ। এটা ঘটেছে কারণ বিভিন্ন দল ক্ষমতার জন্য লড়াই করছিল। মুঘল সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ছিল, অন্যদিকে মারাঠারা শক্তিশালী হয়ে উঠছিল। একই সময়ে, আহমেদ শাহ আবদালি ছিলেন, একজন আফগান নেতা যিনি তার অঞ্চল প্রসারিত করতে চেয়েছিলেন। বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে এই উত্তেজনা ব্যাপক যুদ্ধের দিকে পরিচালিত করে। এটি শুধুমাত্র একটি সমস্যা ছিল না যা যুদ্ধের কারণ ছিল; এটি ছিল নিয়ন্ত্রণ, বিশ্বাস এবং আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পর্কিত সমস্যার সংমিশ্রণ। এই জটিল কারণে এই যুদ্ধ ভারতের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত হয়ে ওঠে।
(খ) ১৭৭৩ সালের রেগুলেটিং অ্যাক্ট-এর গুরুত্ব পর্যালোচনা করো।
Ans. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তারা ভারতে কাজ করার সময় অতি ধনী হয়েছিলেন। ব্রিটেনের অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন যে তারা তাদের দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে বিপর্যস্ত করতে পারে। এইভাবে, ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের ব্যবস্থাপনা ওভারহল করার জন্য 1773 সালের রেগুলেটিং অ্যাক্ট প্রয়োগ করা হয়েছিল।
(গ) ঔপনিবেশিক বাংলায় কি অবশিল্পায়ন ঘটেছিল?
Ans. কোম্পানির কর্মচারি দস্তকের অপব্যবহার করে ভারতের বাজারে শিল্যজাত দ্রব্য অবাদে ব্যবসা-বানিজ্য করতে থাকায়, কুটি শিল্পের ক্ষতি হয় । তাই একে অবশিল্পায়ন বলা হয়েছে । ব্রিটিশ শাসনের ক্রমান্বয়ে সম্প্রসারণ এবং সমগ্র ভারতে রাজকীয় ক্ষমতার পতনের ফলে চাহিদা কমে যাওয়ায় শিল্পহীনতা তৈরি হয়। ব্রিটিশ শাসন ও নীতি: ব্রিটিশ শাসনের প্রতিষ্ঠা হস্তশিল্পের অস্তিত্বকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করেছিল।
(ঘ) অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
Ans. অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি বলতে কী বোঝো? লর্ড ওয়েলেসলি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে দেশীয় রাজ্যগুলিকে বিদেশি আক্রমণ থেকে রক্ষার অজুহাতে যে নীতির প্রয়ােগ ঘটিয়ে কোম্পানির অধীনতা গ্রহণের জন্য বাধ্য করেন , তার নামঅধীনতামূলক মিত্রতা নীতি ।
(ঙ) 'মহারানির ঘোষণা'-র তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
Ans. মহারানির এই ঘােষণাপত্রে বলা হয়—
১) দেশীয় রাজাদের মর্যাদা দান : এখন থেকে দেশীয় রাজ্যগুলির সঙ্গে পূর্ব সম্পাদিত সমস্ত সন্ধিকে মান্য করা হবে এবং তাঁদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকারকে যথােচিত সম্মান দেওয়া হবে।
২) স্বত্ববিলােপ নীতি প্রত্যাহার : দেশীয় রাজ্যগুলিতে এযাবৎ প্রচলিত দেশীয় প্রথাগুলিকে স্বীকার করে নেওয়া হবে, দেশীয় রাজারা আগের মতাে দত্তকপুত্র গ্রহণ করতে পারবেন এবং স্বত্ববিলােপ নীতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
3) স্বাধীন ধর্মাচরণ : কারও কোনাে ধর্মাচরণে বাধা দেওয়া হবে না। জাতিধর্মনির্বিশেষে সমস্ত ভারতীয়কে শুধু যােগ্যতার মাপকাঠিতে উচ্চ রাজপদে নিযুক্ত করা হবে।
(চ) আর্যসমাজ বা প্রার্থনা সমাজের ওপর সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।
Ans. আর্য সমাজ হল একটি হিন্দু আন্দোলন, 1875 সালে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। আর্য সমাজের অনুসারীরা বিশ্বাস করে যে বেদগুলি অমূলক, এবং ঈশ্বরের আক্ষরিক শব্দ। 1800-এর দশকে ভারতে ক্রমবর্ধমান নাগরিক অধিকার আন্দোলনের দিকে কাজ করে এমন হিন্দু সংগঠনগুলির মধ্যে একটি ছিল আর্য সমাজ। আর্য সমাজ মূলত স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী প্রবর্তিত দশটি নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। আর্য সমাজের সদস্যগণ নীতিগুলো মেনে চলেন। একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী সংগঠনটি উপাসনা পদ্ধতি নির্গুণ ।
(ছ) মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা কাকে বলে?
Ans. লর্ড মাউন্টব্যাটেন ছিলেন ভারতের শেষ ভাইসরয়। তিনি 3 জুন, 1947 তারিখে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন 1947 নামে পরিচিত একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। এই পরিকল্পনার মধ্যে দেশভাগ, স্বায়ত্তশাসন, উভয় জাতির সার্বভৌমত্ব এবং তাদের পৃথক সংবিধান গঠনের অধিকার স্বীকৃত নীতিগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
(জ) ভারতের সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
Ans. ভারতীয় সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য
1. বিশ্বের দীর্ঘতম ও জটিলতম সংবিধান [Largest and Rigid Constitution]
2. সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় [Flexible]
3. যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো [Federal]
4.নাগরিকের মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি [Fundamental right]
5. নির্দেশমূলক নীতির সংযোজন [Directive Principle]
6. সংসদীয় শাসনব্যবস্থা [Parliamentary System]
বিভাগ গ
৩। যে-কোনো তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
(ক) তুমি কি মনে করো ভারত ইতিহাসে অষ্টাদশ শতক 'অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগ' ছিল?
(খ) লর্ড কর্নওয়ালিসের ভূমিরাজস্ব নীতি আলোচনা করো।
Ans.
কর্ণওয়ালিস যখন ভারতে গভর্নর- জেনারেল হিসেবে আসেন, তখন নানা মহলে স্থায়ী বন্দোবস্তের সপক্ষে মত তৈরি হয়ে দিগয়েছিল। অবশ্য এ ব্যাপারে কর্ণওয়ালিসের কোনও ভূমিকা নেই ।
ড. চৌধুরী কর্ণওয়ালিসের স্মারকলিপি বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে, স্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করে কর্ণওয়ালিস বাংলার শিল্পবাণিজ্যকে ধ্বংস করতে চাননি। তিনি আন্তরিকভাবেই বাংলার কৃষিজীবনে একটা গতি আনতে চেয়েছিলেন। তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল স্বদেশের শিল্প বাণিজ্যকে সমৃদ্ধ করা, তবে তার অন্যতম শর্ত হিসেবে তিনি বাংলার কৃষকসমাজ ও গ্রামজীবনের সচ্ছলতা বাড়াতে চেয়েছিলেন।
কর্ণওয়ালিসের ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার সাথে পিটের ভারত-আইনের মিল থাকায় ভূমি- সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া সহজতর হয়েছিল। শাসনদায়িত্ব গ্রহণ করেই কর্ণওয়ালিস জেলা কালেক্টরদের এ দেশের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেন। এইসব তথ্যের মধ্যে প্রধান ছিল-(১) জমির বন্দোবস্ত কার সাথে হওয়া উচিত, (২) রাজস্বের হার ভিাবে নির্ধারিত হবে এবং (৩) এখনই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পরি-কাঠামো আছে কিনা ইত্যাদি। এই অনুসন্ধান কাজের নেতৃত্বে থাকে রাজস্ববিভাগের সচিব স্যার জন শোর-এর ওপর।
তবে এখনই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রশ্নে শোর ও কর্ণওয়ালিসের মধ্যে তীব্র বিতর্কের সূত্রপাত হয়। শোর বলেন যে, বাংলার ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে কোম্পানির জ্ঞান খুবই সীমিত। তাছাড়া, বিগত বছরগুলিতে বন্দোবস্ত-ব্যবস্থার ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হল যুক্তিপূর্ণ রাজস্ব-হার নির্ধারণের ব্যর্থতা। তাই স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দেবার আগে সমস্ত জমি জরিপ করা ও জমির উৎপাদিকা-শক্তির তারতম্য বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া দরকার । এজন্য সময়ের প্রয়োজন। তাই তিনি আপাতত একটি দীর্ঘকালীন বন্দোবস্তের পক্ষে মত দেন।
কর্ণওয়ালিস শেষ পর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্তে স্থির থাকেন। তিনি ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ও বিহারে এবং ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে উড়িষ্যায় দশ বছরের জন্য জমি বন্দোবস্ত দেন। এই সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দেন যে, ইংল্যান্ডের পরিচালক-সভা অনুমোদন করলে এই দশশালা বন্দোবস্তই 'চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত' বলে বিবেচিত হবে।
(গ) উনিশ শতকে বাংলার ইতিহাসে নব্যবঙ্গ আন্দোলনের গুরুত্ব আলোচনা করো।
(ঘ) ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো।
Ans. ✔️
(ঙ) ভারতবর্ষে জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে অসহযোগ আন্দোলনের গুরুত্ব আলোচনা করো।
Ans.
অসহযোগ আন্দোলনের গুরুত্ব :-
আপাত ব্যর্থতা সত্ত্বেও ভারত-এর স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অসহযোগ আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই আন্দোলনের গুরুত্ব হল-
(১) ভারতবর্ষের ইতিহাসে অসহযোগ আন্দোলনই হল প্রথম সুসংবদ্ধ গণ-আন্দোলন। শ্রমিক, কৃষক, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ, ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ-সর্বস্তরের মানুষের যোগদানে এই আন্দোলন যথার্থ গণ-আন্দোলনের রূপ পরিগ্রহ করে।
(২) কেবলমাত্র ইংরেজ বিরোধিতাই নয় জমিদারি শোষণ, পাঞ্জাবে দুর্নীতি, রাজস্থানে দেশীয় রাজাদের অত্যাচার এবং পুঁজি পতিদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ধর্মঘট এই আন্দোলনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
(৩) প্রকৃত অর্থে অসহযোগ আন্দোলন ছিল ব্রিটিশ-বিরোধী প্রথম সর্বভারতীয় গণ-আন্দোলন। ব্যাপকতার দিক থেকে দেখতে গেলে এই আন্দোলন ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহকেও অতিক্রম করে যায়।
(৪) এই আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ অশিক্ষিত দরিদ্রতম গ্রামবাসী পর্যন্ত সকলেই বিদেশী সাম্রাজ্যবাদের স্বরূপ উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়, তাদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং তারা আত্মশক্তি ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়।
উপসংহার:- অসহযোগ আন্দোলনের ফলে দারিদ্র, অস্পৃশ্যতা, মদ্যপান প্রভৃতি সামাজিক ব্যাধি গুলি সম্পর্কে জনগণ সচেতন হয়ে ওঠে এবং খাদি ও কুটির শিল্পের বিকাশের ফলে তাদের মধ্যে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা ফিরে আসে।
(চ) ভারত বিভাজন কি অনিবার্য ছিল?
Ans. ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ভারত স্বাধীন হল এবং ভারত ও পাকিস্তান দু'টি পৃথক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হল। ভারত বিভাগ সত্যই অনিবার্য ছিল কিনা, তা একটি বহু বিতর্কিত ও বহু আলোচিত বিষয়।
কয়েকজন নেতার ভুল এবং তাঁদের স্বার্থান্বেষী মনোভাবই ভারত বিভাগকে অনিবার্য করে তুলেছিল। (১) ভারত ভাগের জন্য অনেক সময়েই জিন্নাকে দায়ী করা হয়। লিওনার্ড মোশলে বলেন যে, "পাকিস্তান হল মহম্মদ আলি জিন্নার একক অবদান।" কেবলমাত্র মোশলে-ই নন আরও অনেক ঐতিহাসিক এই মতামতই প্রকাশ করে থাকেন। (২) অনেকের মতে, ব্রিটিশ সরকারের বিভেদ নীতিই ভারত ভাগের জন্য দায়ী ছিল। এই নীতি অবলম্বন করে সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থেই তারা ভারত বিভাগ করে। (৩) অন্যদিকে রজনীপাম দত্ত, অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, প্রমুখ মার্কসবাদী পণ্ডিতগণ এ জন্য জাতীয় কংগ্রেসের ওপর দোষারোপ করেন।
ভারত বিভাগে জিন্নার কিছুটা দায়িত্ব থাকলেও তিনিই একমাত্র দায়ী নন। একদা জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য এবং 'হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের রাজদূত' হিসেবে চিহ্নিত জিন্না সত্যই তিনি পাকিস্তান চাননি । মৌলানা আজাদ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক কালের পাকিস্তানি ঐতিহাসিক ড. আয়েষা জালাল এই মত পোষণ করেন।
১৯৩৭-এর নির্বাচনের পর সরকার গঠনকালে মুসলিম লীগ তার দু'জন সদস্যকে উত্তর প্রদেশ মন্ত্রিসভায় গ্রহণ করার অনুরোধ জানায়। এই অনুরোধ প্রত্যাখাত হলে জিন্না প্রবলভাবে কংগ্রেস-বিরোধী হয়ে ওঠেন। এ সম্পর্ক আর জোড়া লাগেনি । দিন দিন ব্যবধান বাড়তেই থাকে এবং তার শেষ পরিণাম ভারত বিভাগ।
2023
4th Sem-History-G/(GE
HISTORY GENERAL
Paper: GE/CC-4
Full Marks: 65
বিভাগ ক
১। নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো:
(ক) পলাশির যুদ্ধ কত সালে হয়েছিল?
Ans. 1756-1757
(খ) আহম্মদ শাহ্ আবদালি কে ছিলেন?
Ans. আহমদ শাহ আবদালি ছিলেন আফগান দুররানি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও আধুনিক আফগানিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা।
(গ) কে বাংলায় দ্বৈত শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেন?
Ans. রবার্ট ক্লাইভ
ঘ) ব্রামাসভা'-র প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?
Ans. রাজা রাম মোহন রায়
(ঙ) 'হিন্দু পেট্রিয়ট'-এর প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন?
Ans. গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(চ) হাজী শরিয়ৎউল্লাহ কে ছিলেন?
Ans. ধর্মীয় সংস্কারক, নীলকর ও সামন্তবাদ বিরোধী নেতা এবং ভারতবর্ষে সংঘটিত ফরায়েজি আন্দোলনের মুখপাত্র।
(ছ) ভারতের প্রথম ভাইসরয় কে ছিলেন?
Ans. লর্ড ক্যানিং ছিলেন 1858 সালের
(জ) 'সেফটি ভাল্ভ তত্ত্ব' বলতে কী বোঝো?
Ans. এই তত্ত্ব অনুসারে, লর্ড ডাফরিন জনসাধারণের মধ্যে অসন্তোষ কমানোর জন্য একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ এবং সাংবিধানিক পর্যায় বা সুরক্ষা ভালভ প্রদানের জন্য একটি সংস্থা তৈরি করতে চেয়েছিলেন যা 1857 সালের বিদ্রোহের চেয়েও বড় একটি সহিংস বিপ্লবের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এই তত্ত্বটি প্রথম ছিল।
(ক) আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?
Ans. দয়ানন্দ সরস্বতী 1857 সালে বোম্বেতে
(ঞ) বাংলায় স্বদেশি আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী একজন মহিলা নেত্রীর নাম লেখো।
Ans. কুমুদিনী মিত্র, লীলাবতী মিত্র, নির্মলা সরকার, হেমাঙ্গিনী দাস।
(ট) অসহযোগ আন্দোলন কত সালে প্রত্যাহার করা হয়?
Ans. 1920 সালের 1 আগস্ট অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়েছিল, পরে 1922 সালের 12 ফেব্রুয়ারি চৌরি চৌড়ার ঘটনার কারণে এটি প্রত্যাহার করা হয়েছিল ।
(ঠ) মাস্টারদা' নামে কে পরিচিত?
Ans. সূর্য কুমার সেন
(ড) কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী পার্টি কবে গঠিত হয়?
Ans. 1934 সালের 22-23 অক্টোবর বোম্বেতে
(ঢ) 'হিন্দ স্বরাজ', (Ilind Swaraj) গ্রন্থের লেখক কে?
Ans. মহাত্মা গান্ধী এর পুস্তক
(ণ) ভারতীয় সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি কে ছিলেন?
ans. বাবাসাহেব আম্বেদকর
বিভাগ - খ
২। যে-কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
(ক) নাদির শাহ্-র ভারত আক্রমণের প্রভাব আলোচনা করো।
Ans. 1739 সালে নাদির শাহ ভারত আক্রমণ করেন এবং দিল্লী লুন্ঠন করেন। নাদির শাহের আক্রমণ মুঘল সাম্রাজ্যের দুর্বলতাকে প্রকট করে দেয়। সিন্ধু নদের পশ্চিমের অঞ্চল এবং কাবুল মুঘল সাম্রাজ্যের হস্তচ্যুত হওয়ায় সীমান্তে বৈদেশিক আক্রমণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহী ইউরোপীয় বণিকশ্রেণীর কাছে নাদির শাহের আক্রমণ মুঘল সাম্রাজ্যের অবক্ষয়ের চিত্রটিকে স্পষ্ট করে দেয় এবং ভারতে বাণিজ্য সম্প্রসারণে তাঁদের পক্ষে সমকালীন ভারতীয় রাজনীতি অনুকূল হয়ে ওঠে। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত পথে বৈদেশিক আক্রমণের সম্ভাবনা মারাঠা শক্তিকে ভারতের রাষ্ট্র ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে আগ্রহী করে তোলে ।
(খ) ১৭৬৫ সালে কোম্পানি কর্তৃক দেওয়ানি লাভের অর্থনৈতিক তাৎপর্য আলোচনা করো।
(গ) উপনিবেশিক বাংলায় কি অবশিল্পায়ন ঘটেছিল?
Ans. ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধের পর থেকে বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ভারতবর্ষে রাজনৈতিক আধিপত্য দৃঢ় করার সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতীয় শিল্পের ওপরে নিজ নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখতে সচেষ্ট হয়েছিল। বাণিজ্যক্ষেত্রে দেশীয় প্রতিযোগী শক্তিগুলির উত্থান রোধে উদ্যোগী ছিল কোম্পানি। ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদ ভারতীয় অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল তার ফলে ভারতীয় শিল্পের বিকাশের ধারাটি ব্যাহত হয়েছিল। দেশীয় শিল্পের অনগ্রসরতাকে অবশিল্পায়ন নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
(ঘ) বাংলার নবজাগরণ বলতে কী বোঝায়?
Ans. বাংলার নবজাগরণ , যাকে বাঙালি রেনেসাঁও বলা হয়, ব্রিটিশ রাজের বঙ্গীয় অঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক, সামাজিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং শৈল্পিক আন্দোলন ছিল, যা ১৮ শতকের শেষ থেকে ২০ শতকের প্রথম দিকে বিস্তৃত হয়।
(ঙ) লর্ড কার্জন কেন বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব দিয়েছিলেন?
Ans. লর্ড কার্জন তৎকালীন ভারতের ভাইসরয় ছিলেন এবং তিনি বঙ্গভঙ্গের ঘোষণা করেছিলেন। ঘোষিত কারণটি ছিল প্রশাসনের সুবিধার জন্য কিন্তু আসল কারণ ছিল বাংলার বর্ধিষ্ণু জাতীয়তাবাদকে দুর্বল করে দেওয়া। কার্জনের মতে, বঙ্গভঙ্গের পরে দুটি প্রদেশ হবে বাংলা (অধুনা পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং বিহার সহ), পূর্ব বাংলা এবং আসাম।
(চ) সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা কাকে বলে?
Ans. ব্রিটিশ সরকার ভারতে তাদের শাসনকে নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী করার উদ্দেশ্যে হিন্দু, মুসলিম-সহ বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। এজন্য সরকার ভারতে বিভাজন ও শাসননীতি অনুসরণ করে। সরকারের বিভাজন ও শাসননীতিকে কার্যকরী করতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ম্যাকডােনাল্ড ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচনের কথা ঘােষণা করেন। তার এই নীতি 'সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা' নামে পরিচিত।
(ছ) তেভাগা আন্দোলনের উপর একটি টীকা লেখো।
Ans. ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বর -এ শুরু হয়ে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত চলে। বর্গা বা ভাগ-চাষীরা এতে অংশ নেয়। মোট উৎপন্ন ফসলের তিন ভাগের দুইভাগ পাবে চাষী, এক ভাগ জমির মালিক- এই দাবি থেকেই তেভাগা আন্দোলনের সূত্রপাত। এই আন্দোলনের জনক নামে খ্যাত হাজী মোহাম্মদ দানেশ। আগে বর্গাপ্রথায় জমির সমস্ত ফসল মালিকের গোলায় উঠত এবং ভূমিহীন কৃষক বা ভাগ-চাষীর জন্য উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক বা আরও কম বরাদ্দ থাকত।
(জ) ক্যাবিনেট মিশন বলতে কী বোঝো?
Ans. 1946 সালের " ক্যাবিনেট মিশন " ভারতে এসেছিল যার লক্ষ্য ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে ভারতীয় নেতৃত্বের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা করা। মিশনের লক্ষ্য ছিল ভারতের ঐক্য রক্ষা করা এবং এর স্বাধীনতা প্রদান করা। মিশনটি 3টি প্রশাসনিক গ্রুপে বিভক্ত করার প্রস্তাব করেছিল: A, B, এবং C ক্লাস্টার ।
📌অষ্টাদশ শতক ছিল গতিময়তার যুগ