
বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ
উঃ বিশালাকার ও ভারী বরফের স্তূপ পাহাড়ের ঢাল বেয়ে অভিকর্ষের টানে ধীর গতিতে নীচের দিকে নামতে থাকলে তাকে হিমবাহ বলে।
১১২. পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশীয় হিমবাহের নাম কী?
উঃ ল্যাম্বার্ট।
১১৩. টাইটানিক জাহাজ কবে কীভাবে ডুবে যায়?
উঃ ১৯১২ সালে হিমশৈলের আঘাতে ডুবে যায়।
১১৪. হিলশৈলের কত অংশ জলের উপরে ভাসে?
উঃ হিমশৈলের মাত্র ১/৯ অংশ জলের উপরে ভেসে থাকে।
১১৫. পার্বত্য হিমবাহ বা উপত্যকা হিমবাহ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ উচ্চ পার্বত্য ঢাল বেয়ে অভিকর্ষের তানে যে হিমবাহ ধীর গতিতে নীচের দিকে নামে তাকে পার্বত্য হিমবাহ বা উপত্যকা হিমবাহ বলে।
১১৬. ক্রেভাস কী?
উঃ হিমবাহের উপরের বরফপৃষ্ঠে কখনও কখনও ফাটল দেখা যায়। এই ফাটলকে ক্রেভাস বলে।
১১৭. বার্গশ্রুন্ড কী?
উঃ হিমবাহের বরফে সৃষ্ট ফাটল বা ক্রেভাস সমান্তরাল বা আড়াআড়িভাবে অবস্থান করে। অতি গভীর ও প্রশস্ত হিমবাহ ফাটলকে বার্গশ্রুন্ড বলে।
১১৮. পাদদেশীয় হিমবাহ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ পর্বতের পাদদেশে যে হিমবাহ দেখা যায় তাকে পাদদেশীয় হিমবাহ বলে। যথা- আলাস্কার ম্যালাসপিনা হিমবাহ।
১১৯. হিমবাহের কয়টি কাজ ও কী কী?
উঃ তিনটি। ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয়।
১২০. অবঘর্ষ কাকে বলে?
উঃ গতিশীল হিমবাহের চলমান শিলাখণ্ড ভূ-পৃষ্ঠের সঙ্গে ঘর্ষণ করে ক্ষয়কার্য করে, একে অবঘর্ষ ক্ষয় বলে।
১২১. উৎপাটন কাকে বলে?
উঃ চলমান হিমবাহের প্রচন্ড ধাক্কার প্রভাবে ভূ-পৃষ্ঠস্থ শিলাস্তর থেকেওনেকসময় বিশালাকার শিথিল শিলাখণ্ড স্থানচ্যুত হয়, একে উৎপাটন বলে।
১২২. হিমবাহের ক্ষয়কার্যের নিয়ন্ত্রকগুলি কী কী?
উঃ হিমবাহের ক্ষয়কার্যের নিয়ন্ত্রকগুলি হল
১) হিমবাহের গভীরতা ও গতিবেগ,
২) ভূমির ঢাল,
৩) শিলার প্রকৃতি
৪) জলবায়ু।
১২৩. সার্ক কাকে বলে? এগুলি কোথায় কী কী নামে পরিচিত?
উঃ উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে পাহাড়ের খাঁজে উৎপন্ন অর্ধগোলাকৃতি গহ্বরকে সার্ক বলে। এগুলি-
ফ্রান্সে – সার্ক,
স্কটল্যান্ডে – করি,
নরওয়ে-তে – কাম,
জার্মানীতে – কার নামে পরিচিত।
১২৪. করিহ্রদ কী?
উঃ সার্কের মধ্যাংশের খাদটিতে অনেকসময় হিমবাহের অবশিষ্ট অংশ থেকে যায়। পরবর্তীকালে ঐ হিমবাহ গলে গিয়ে যে হ্রদের সৃষ্টি হয় তাকে করি হ্রদ বলে।
১২৫. টার্ন কী?
উঃ ক্ষুদ্রাকার করিহ্রদকে টার্ন বলে।
১২৬. এরিটি কাকে বলে?
উঃ দুটি করির মধ্যবর্তী সংকীর্ণ ও তীক্ষ্ণ প্রাচীরর মত উঁচু চূড়াকে এরিটি বলে।
১২৭. পিরামিড চূড়া বা হর্ন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ পার্বত্য হিমবাহের উচ্চ অংশে কয়েকটি এরিটি বিপরীতমুখী হয়ে অবস্থান করলে তাদের মধ্যবর্তী শৃঙ্গটি পিরামিডের মত দেখায়, এরূপ চূড়াকে পিরামিড চূড়া বা হর্ন বলে। যথা- আল্পস পর্বতের ম্যাটারহর্ন ও ভারতের হিমালয়ের নীলকন্ঠ পিরামিড চূরার উদাহরণ।
১২৮. কর্তিত শৈলশিরা বা কর্তিত স্পার কাকে বলে?
উঃ উপত্যকা হিমবাহের চলার পথের উভয়দিকে প্রায়শই স্পার (পর্বতের অভিক্ষিপ্ত অংশ) দেখা যায়। হিমবাহ প্রবাহ ঐ স্পার দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হলে স্পারগুলিকে ক্ষয় করে হিমবাহ চলতে থাকে, ক্ষয়প্রাপ্ত এইসব স্পারকে কর্তিত শৈলশিরা বা কর্তিত স্পার বলে।
১২৯. হিমদ্রোণী কাকে বলে?
উঃ হিমবাহ যে পার্বত্য উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, ক্রমাগত ক্ষয়কার্যের ফলে উপত্যকাটি ইংরেজি ‘U’ আকার ধারণ করে, একে ‘U’-আকৃতির উপত্যকা বা হিমদ্রোণী বলে।
১৩০. হিমসিঁড়ি কী?
উঃ পার্বত্য হিমবাহ অঞ্চলে শিলার কাঠিন্যের তারতম্যের কারণে অসম ক্ষয়কার্য হয়, এরফলে উপত্যকা বরাবর নানা ধাপ বা সিঁড়ির সৃষ্টি হয়। এরূপ ধাপকে হিমসিঁড়ি বলে।
১৩১. প্যাটারনস্টার হ্রদ কাকে বলে?
উঃ হিমদ্রোণীর ট্রিড অংশটি সাধারণত কিছুটা অবতল হয়। হিমবাহ সরে গেলে ওই অংশে জল জমে হ্রদের সৃষ্টি হয়। একে প্যাটারনস্টার হ্রদ বলে।
১৩২. ঝুলন্ত উপত্যকা কী? উদাহরণ দাও।
উঃ প্রধান হিমবাহের উপত্যকা অনেক গভীর হয়। ছোট ছোট উপহিমবাহ প্রধান হিমবাহের সঙ্গে মিলিত হয়। ছোট হিমবাহগুলির উপত্যকা অগভীর হয়। প্রধান ও উপহিমবাহের মিলনস্থলে উপহিমবাহের অগভীর উপত্যকা যেন প্রধান হিমবাহের গভীর উপত্যকার উপর ঝুলন্ত অবস্থায় আছে বলে মনে হয়। একে ঝুলন্ত উপত্যকা বলে। যথা- বদ্রীনাথের কাছে ঋষিগঙ্গা একটি ঝুলন্ত উপত্যকার উদাহরণ।
১৩৩. রসে মোতানে কাকে বলে?
উঃ হিমবাহের চলার পথে অনেক সময় কঠিন শিলা ঢিবির মত অবস্থান করে। তখন অবঘর্ষ ক্ষয়ে ঐ শিলার সম্মুখভাগ মসৃণ হয়, কিন্তু বিপরীত দিকে উৎপাটন প্রক্রিয়ায় শিলায় অসমান খাঁজ বা ফাটল সৃষ্টি হয়। এই প্রকার ভূমিরূপকে রসে মোতানে বলে।
১৩৪. ক্র্যাগ অ্যান্ড টেল কী?
উঃ হিমবাহের চলার পথে কখনও কখনও উঁচু কঠিন শিলার পিছনে নরম শিলা অবস্থান করে। এক্ষেত্রে পিছনের নরম শিলা কঠিন শিলার বাধায় খুব কম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। কঠিন শিলাকে ক্র্যাগ ও পিছনের সরু লেজ আকৃতির নরম শিলাকে টেল বলে।
১৩৫. ফিয়র্ড কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ সুমেরু মহাদেশের সমুদ্রপৃষ্ঠ সংলগ্ন স্থলভাগে হিমবাহের গভীর ক্ষয়কার্য দ্বারা বেসিন (গভীর অবনত উপত্যকা) সৃষ্টি হয়। এর গভীরতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নীচে থাকে বলে এখানে সমুদ্রের জল প্রবেশ করে। এরূপ জলময় অংশকে ফিয়র্ড বলে।
১৩৬. গ্রাবরেখা কাকে বলে? কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ পার্বত্য প্রবাহে হিমবাহের সঙ্গে বাহিত বিভিন্ন পদার্থ উপত্যকার বিভিন্ন অংশে সঞ্চিত হয়। এই সঞ্চয়ের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপকে গ্রাবরেখা বলে।
গ্রাবরেখা তিন প্রকার। যথা- পার্শ্ব গ্রাবরেখা, মধ্য গ্রাবরেখা ও প্রান্ত গ্রাবরেখা।
১৩৭. পার্শ্ব গ্রাবরেখা কাকে বলে?
উঃ পার্বত্য হিমবাহের প্রবাহ পথের দুই পাশে যে সঞ্চয় হয় তাকে পার্শ্ব গ্রাবরেখা বলে।
১৩৮. মধ্য গ্রাবরেখা কাকে বলে?
উঃ একটি প্রধান হিমবাহের সঙ্গে একটি উপহিমবাহ মিলিত হলে মিলনস্থলে যে হিমবাহ সঞ্চয় হয় তাকে মধ্য গ্রাবরেখা বলে।
১৩৯. প্রান্ত গ্রাবরেখা কাকে বলে?
উঃ পর্বতের পাদদেশ অঞ্চলে হিমবাহের যাত্রা শেষ হয়। এখানে হিমবাহের বরফ গলে যায় এবং হিমবাহিত পদার্থসমূহ সঞ্চিত হয়। হিমবাহের প্রান্তে এরূপ সঞ্চয়কে প্রান্ত গ্রাবরেখা বলে।
১৪০. বহিঃধৌত সমভূমি কাকে বলে?
উঃ হিমবাহের প্রবাহপথের শেষে সঞ্চিত পদার্থসমূহ বরফগলা জল ও নদীর সাহায্যে সম্মুখদিকে কিছুটা দূরে বাহিত হয়। তারপর পুনরায় সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে বহিঃধৌত সমভূমি বলে।
১৪১. ডেকেনশট্টার কী?
উঃ হিমবাহের প্রবাহপথের শেষে সঞ্চিত পদার্থসমূহ বরফগলা জল ও নদীর সাহায্যে সম্মুখদিকে কিছুটা দূরে বাহিত হয়। তারপর পুনরায় সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাকে বহিঃধৌত সমভূমি বলে। আল্পস পর্বতের পাদদেশ অঞ্চলে এরূপ সঞ্চয়কে ডেকেনশট্টার বলে।
১৪২. কেটল কাকে বলে?
উঃ অনেক সময় বহিঃধৌত সমভূমির সঞ্চয়ের বরফের চাঁই চাপা পড়ে যায়। পরে বরফ গলে ওইখানে যে গর্তের সৃষ্টি হয় তাকে কেটল বলে।
১৪৩. কেটল হ্রদ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ অনেক সময় বহিঃধৌত সমভূমির সঞ্চয়ের বরফের চাঁই চাপা পড়ে যায়। পরে বরফ গলে ওইখানে যে গর্তের সৃষ্টি হয় তাকে কেটল বলে। এই প্রকার গর্ত বা কেটল জলপূর্ণ হয়ে হ্রদের আকার নিলে তাকে কেটল হ্রদ বলে।
১৪৪. ভার্ব কী?
উঃ কেটল হ্রদের তলদেশে বহু বছর ধরে স্তরে স্তরে যে পলি সঞ্চিত হয় তাকে ভার্ব বলে।
১৪৫. ড্রামলিন কাকে বলে?
উঃ হিমবাহ বাহিত বিভিন্ন আকৃতির শিলাখণ্ড, নুড়ি, বালি, কাঁকর কাদা প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে সমভূমির সৃষ্টি করে। এরূপ সমভূমির আকৃতি উলটানো নোউকা বা উলতানো চামচের মতো দেখতে হলে তাকে ড্রামলিন বলে।
১৪৬. এসকার কাকে বলে?
উঃ পর্বতের পাদদেশ অঞ্চলে হিমবাহের বয়ে আনা শিলাখণ্ড, নুড়ি, কাদা প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে যে আঁকাবাঁকা শৈলশিরা বা বাঁধের ন্যায় ভূমিরূপ সৃষ্টি করে তাকে এসকার বলে।
১৪৭. Beaded Esker কী?
উঃ আয়ারল্যান্ড ও ফিনল্যান্ডে এক বিশেষ ধরনের এসকার দেখা যায়। এই শৈলশিরা মাঝে মাঝে প্রশস্ত ও ‘ব’-আকৃতির হয়। এই এসকারকে Beaded Esker বলে।
১৪৮. কেম কাকে বলে?
উঃ পর্বতের পাদদেশ অঞ্চলে বরফ গলে গেলে ওই স্থানে হিমবাহ বাহিত পদার্থ সঞ্চিত হয়ে যে ‘ব’-আকৃতি বা ত্রিকোণাকৃতি ঢিবি সৃষ্টি করে তাকে কেম বলে।
১৪৯. কেম মঞ্চ কাকে বলে?
উঃ হিমবাহ প্রান্তের পার্শ্বদেশে সঞ্চিত কেমের উপরিভাগ ধাপ বা মঞ্চ আকৃতির হলে তাকে কেম মঞ্চ বলে।
১৫০. কেম পরিবার কাকে বলে?
উঃ একাধিক কেম পরস্পর রৈখিকভাবে অবস্থান করলে তাকে kame complex বা কেম পরিবার বলে।
১৫১. কোন অঞ্চলে বায়ুর কাজের প্রাধান্য সর্বাধিক?
উঃ মরু অঞ্চলে।
১৫২. অবস্থান অনুসারে মরুভূমিকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় কী কী?
উঃ তিন ভাগে। যথা- উষ্ণ মরুভূমি, নাতিশীতোষ্ণ মরুভূমি ও শীতল মরুভূমি।
১৫৩. উষ্ণ মরুভূমি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ উষ্ণ মণ্ডলে অবস্থিত মরুভূমিকে উষ্ণ মরুভূমি বলে। যথা- আফ্রিকার সাহারা, কালাহারি, আরবের মরুভূমি, ভারতের থর মরুভূমি প্রভৃতি।
১৫৪. নাতিশীতোষ্ণ মরুভূমি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে অবস্থিত মরুভূমিকে নাতিশীতোষ্ণ মরুভূমি বলে। যথা- চিনের তাকলামাকান, মঙ্গোলিয়ার গোবি প্রভৃতি।
১৫৫. শীতল মরুভূমি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ শীতল অঞ্চলে অবস্থিত মরুভূমিকে নাতিশীতোষ্ণ মরুভূমি বলে। যথা- গ্রীনল্যান্ড, লাদাখ প্রভৃতি।
১৫৬. বালুকাময় মরুভূমি কাকে বলে? এই মরুভূমি সাহারা ও তুর্কিস্থানে কী নামে পরিচিত?
উঃ যে মরুভূমিতে সর্বত্রই বালির প্রাধান্য থাকে তাকে বালুকাময় মরুভূমি বলে।
এই মরুভূমি সাহারায় আর্গ ও তুর্কিস্থানে কুম নামে পরিচিত।
১৫৭. বালুকণা কী? বালুকণা কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উঃ কোয়ার্জ নামক খনিজের ক্ষুদ্রাকার কণাকে বালুকণা বলে।
বালুকণা সৃষ্টির পদ্ধতিগুলি হল-
১) কোয়ার্জ সমৃদ্ধ বিভিন্ন বৃহদাকার শিলা আবহবিকারের প্রভাবে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় ও বিয়োজিত হয়।
২) চূর্ণ-বিচূর্ণ ও বিয়োজিত শিলাখণ্ড আরও ক্ষয়প্রাপ্ত হলে কোয়ার্জ অবশিষ্টাংশ হিসাবে থেকে যায় এবং বালুকণা সৃষ্টি করে।
৩) সমুদ্রতরঙ্গ বাহিত পদার্থ সৈকতে জমা হয়। ঐ সঞ্চিত পদার্থ থেকে জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় বালুকণার সৃষ্টি হতে পারে।
৪) পাইরোক্লাস্টিক শিলা ক্ষয়ীভূত হতে হতে বালুকণার সৃষ্টি হয়।
১৫৮. বায়ু কী কী পদ্ধতিতে ক্ষয়কার্য করে?
উঃ তিনটি পদ্ধতিতে। যথা- অবঘর্ষ, ঘর্ষণ ও অপসারণ। দেখায়। একে গৌর বা গারা বলে। সাহারা ও ইরানের মরুভূমিতে অনেক গৌর দেখা যায়।
১৫৯. বায়ু কী কী পদ্ধতিতে বহন করে?
উঃ তিনটি পদ্ধতিতে। যথা- ভাসমান, লম্ফদান ও গড়ানো।
১৬০. অপসারণ গর্ত কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ মরুভূমির যে অংশে ক্ষুদ্রাকার বালি এবং পলি শিথিল অবস্থায় থাকে সেখান থেকে ঐ পদার্থসমূহ শক্তিশালী বায়ুর সাথে অন্যত্র অপসারিত হয়। অপসারণের ফলে যেসকল ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয় তাকে অপসারণ গর্ত বলে। ইহা কালাহারিতে ‘প্যান্’ এবং ভারতের থর মরুভূমিতে ‘ধান্দ্’ নামে পরিচিত। যেমন- মিশরের ‘কাত্তারা’ গর্ত সবচেয়ে বড় অপসারণ গর্তের উদাহরণ।
১৬১. গৌর কাকে বলে?
উঃ মরুভূমিতে কোথাও কোথাও কঠিন ও কোমল শিলাস্তর পর্যায়ক্রমে অনুভূমিকভাবে অবস্থান করে। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন দিক থেকে প্রবাহিত বায়ুর অবঘর্ষ ক্ষয়ের ফলে কোমল শিলা দ্রুত ক্ষয় পায়। কঠিন শিলায় ক্ষয় খুব কম হয়। শিলার চারিপাশে অবঘর্ষ ক্ষয়ের ফলে নীচের অংশ সরু পিলার-এর আকার নেয়। উপরের কঠিন শিলা ক্ষয় প্রতিরোধ করে কিছুটা চ্যাপ্টা আকৃতির হয়। তখন ওই ভূমিরূপকে ব্যাঙের ছাতার ন্যায় দেখায়। একে গৌর বা গারা বলে। সাহারা ও ইরানের মরুভূমিতে অনেক গৌর দেখা যায়।
১৬২. জিউগেন কাকে বলে?
উঃ মরু অঞ্চলে কোমল ও কঠিন শিলা পরস্পর অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে কোমল শিলার ফাটল ও দুর্বল অংশ দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে খাতের সৃষ্টি করে। কঠিন শিলা কম ক্ষয়ে প্রা সমতল চূড়া বিশিষ্ট ভূমিরূপ তৈরি করে। খাত ও চূড়াবিশিষ্ট এই ভূমিরূপকে জিউগেন বলে। কালাহারি মরুভূমিতে জিউগেন দেখা যায়।
১৬৩. ইয়ারদাং কাকে বলে?
উঃ মরু অঞ্চলে অনেক সময় কঠিন ও কোমল শিলা পর্যায়ক্রমে উল্লম্বভাবে অবস্থান করে। এক্ষেত্রে বায়ু শিলার অবস্থানের সমান্তরালে প্রবাহিত হলে কোমল শিলা দ্রুত অবঘর্ষ ক্ষয়ের প্রভাবে লম্বা পরিখা বা সুড়ঙ্গের আকার ধারণ করে। কম ক্ষয়প্রাপ্ত কঠিন শিলা প্রাচীরের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকে। এরূপ প্রাচীর পরিখা বিশিষ্ট ভূমিরূপকে ইয়ারদাং বলে।
১৬৪. বালিয়াড়ি কাকে বলে? বালিয়াড়ি গঠনের শর্তগুলি লেখো।
উঃ বালিপূর্ণ বায়ুর গতিপথে গাছপালা, প্রস্তরখন্ড, ঝোপঝার বা অন্য কোন বাধা থাকলে তাতে প্রতিহত হয়ে বায়ুবাহিত বালির কিছু অংশ সেখানে সঞ্চিত হয় এবং উঁচু ঢিবির মত অবস্থান করে, একে বালিয়ারি বলে।
বালিয়ারি গঠনের শর্তগুলি হল-
১) বালির প্রাচুর্য,
২) প্রবল গতিসম্পন্ন বায়ু, যার দ্বারা বালি বাহিত হয়ে অন্যত্র যাবে,
৩) উদ্ভিদ, ঝোপ উঁচু শিলা প্রভৃতি বাধাদানকারী বস্তু,
৪) বালি সঞ্চিত হওয়ার উপযুক্ত স্থান।
১৬৫. নেবখা কী?
উঃ ঝোপ-ঝাড়ের বাধায় সৃষ্ট বালিয়ারিকে নেবখা বলে।