আনা, গন্ডা, কড়া ও ক্রান্তির হিসাব কিভাবে করা যায় ? এবং এদের মধ্যে সম্পর্ক কি ?

আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি এবং তিল কি ?

    আপনি ব্যাংকে চাকুরী করেন । অথবা আপনি কোন জমি কেনার জন্য মনস্থির করেছেন। কিন্তু আপনার সাহস হচ্ছে না জমি কেনার । কারণ আপনি জমির হিস্যা বুঝতে পারেন না। আপনি সিএস খতিয়ানে যে সাংকেতিক আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি, তিল চিহ্ন আছে, সেগুলো বুঝতে পারেন না। ফলে, আপনি জমি কিনতে ঠকার আশঙ্কা করছেন। আবার ব্যাংকে চাকুরী করেন হেতু, ঋণ দেওয়ার সময় জিমির অংশ ঠিকঠাক মতো আছে কিনা, তা জানার জন্যও আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি এবং তিলের হিসাব জানা দরকার ।

    আপনার জানার জন্য নিচে সহজ করে আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি ও তিলের সম্পর্কে আলোচনা করা হলে। প্রথমেই আমরা আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি ও তিলের সাংকেতিক চিহ্ন এর সাথে পরিচিত হই। নিচে, আনা, গন্ডা, কড়া, ক্রান্তি ও তিল এর সাংকেতিক চিহ্নসহ ব্যাখ্যা করা হলোঃ

    আনা

    চিহ্ন = সাংকেতিক নাম

    /

    =

    ১আনা 

    =

    ২আনা

    ৶ 

    =

    ৩আনা

    =

    ৪আনা

    ৷⁄ 

    =

    ৫আনা

    ।৵

    =

    ৬আনা

    ।৶

    =

    ৭আনা

    ।।

    =

    ৮আনা

    ।।/

    =

    ৯আনা

    ।।৵

    =

    ১০আনা

    ।।৶

    =

    ১১আনা

    =

    ১২আনা

    ৸/

    =

    ১৩আনা

    ৸৵

    =

    ১৪আনা

    ৸৶

    =

    ১৫আনা

    ৸। আনা = ১টাকা


    গন্ডা

    20 গন্ডায় ১ আনা। গন্ডাকে যে চিহ্ন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়ঃ
    চিহ্ন = সাংকেতিক নাম

    =

    গন্ডা

    =

    গন্ডা

    =

    ৩গন্ডা

    =

    গন্ডা

    =

    গন্ডা

    =

    গন্ডা

    =

    গন্ডা

    =

    গন্ডা

    =

    গন্ডা

    ১০

    =

    ১০গন্ডা

    ১১

    =

    ১১গন্ডা

    ১২

    =

    ১২গন্ডা

    ১৩

    =

    ১৩গন্ডা

    ১৪

    =

    ১৪গন্ডা

    ১৫

    =

    ১৫গন্ডা

    ১৬ = ১৬গন্ডা
    ১৭ = ১৭গন্ডা
    ১৮ = ১৮গন্ডা
    ১৯ = ১৯গন্ডা
    ২০ গন্ডা = ১আনা



    কড়া


    চিহ্ন = সাংকেতিক নাম

    [বাংলা অর্থ দাড়ি/ইংরাজী অর্থফুলস্টপ]

    =

    ১কড়া

    ।।

    [বাংলা অর্থ দাড়ি/ইংরাজী অর্থফুলস্টপ]

    =

    ২কড়া

    =

    ৩কড়া

    ৸। কড়া

    =

    ১গন্ডা



    ক্রান্তি


    চিহ্ন = সাংকেতিক নাম

    =

    ১ক্রান্তি

    ৴৴

    =

    ২ক্রান্তি

    ৴৴৴ ক্রান্তি

    =

    ১কড়া



    তিল

    ২০ তিলে ০১ ক্রান্তি । তিল কে ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯ ইত্যাদি হিসাবে লেখা হয়ঃ

    চিহ্ন = সাংকেতিক নাম

    =

    ১তিল

    =

    ২তিল

    =

    ৩তিল

    =

    ৪তিল

    =

    ৫তিল

    =

    ৬তিল

    =

    ৭তিল

    =

    ৮তিল

    =

    ৯তিল

    ১০

    =

    ১০তিল

    ১১

    =

    ১১তিল

    ১২

    =

    ১২তিল

    ১৩

    =

    ১৩তিল

    ১৪

    =

    ১৪তিল

    ১৫

    =

    ১৫তিল

    ১৬ = ১৬তিল
    ১৭ = ১৭তিল
    ১৮ = ১৮তিল
    ১৯ = ১৯তিল
    ২০ তিল = ১ক্রান্তি


    আনা, গন্ডা, কড়া ও ক্রান্তির মধ্যে সম্পর্ক কি ?

    এতক্ষণ, আমরা আনা, গন্ডা, কড়া,ক্রান্তি, তিল এর সংকেত সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমাদের এই আনা, গন্ডা, কড়া ক্রান্তি, তিল এককগুলোর মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক জানতে হবে। এদর পারস্পারিক সম্পর্ক না জানলে সম্পত্তির অংশ ভাগ করা কঠিন হয়ে যায়। অন্যদিকে, আনা, গন্ডা, কড়া, তিল এর মধ্যে সম্পর্ক জানা থাকলে , সম্পত্তির বন্টন সঠিক আছে কিনা, তা সহজেই জানা যায়।


    নিচে আনা গন্ডা, কড়া, তিল এর মধ্যে সম্পর্ক তুলে ধরা হলোঃ

    সম্পত্তির পুরো অংশ = ১৬ আনা

    ২০ গন্ডায় ১ আনা

    ৪ কড়ায় ১ গন্ডা

    ৩ ক্রান্তিতে ১ কড়া

    ২০ তিলে ১ ক্রান্তি

    খেয়াল করা দরকার সম্পত্তির সর্বনিম্ন একক হলো তিল। ২০ তিলে ০১ ক্রান্তি । সুতরাং, ৩ ক্রান্তি সমান ৬০ তিল।

    আবার, ৩ ক্রান্তিতে ০১ কড়া। সুতরাং, ১ কড়া সমান ৬০ তিল। ৪ কড়া সমান ২৪০ তিল।

    আবার, ৪ কড়া সমান ১ গন্ডা । সুতরাং   ১ গন্ডা সমান ২৪০ তিল। ২০ গন্ডা সমান ৪৮০০ তিল।

    আবার, ২০ গন্ডা সমান ১ আনা। সুতরাং, ১ আনা সমান ৪৮০০ তিল।


    অতএব, ১৬ আনা সমান ৭৬৮০০ তিল।

    ১৬ আনা সমান ৩২০ গন্ডা ( ১৬ x ২০= ৩২০)

    ১৬ আনা সমান ৩২০ x ৪ = ১২৮০ কড়া

    ১৬ আনা সমান ১২৮০ x ৩ = ৩৮৪০ ক্রান্তি

    ১৬ আনা সমান ৩৮৪০ x ২০= ৭৬৮০০ তিল।


    অংশ নির্ণয়

    প্রতীক তো জানা হলো। এবার অংশ নির্ণয়ের পালা। ধরা যাক, কোন একটি C.S. খতিয়ানে নিম্নরুম চিহ্ন দেওয়া আছে।

    বলা আছে এই খতিয়ানে এই পরিমান জমি নন্দলাল বাবুর প্রাপ্য। তাহলে আবুল হোসেনের জমি কতখানি।এই খতিয়ানে মোট ২৫০ শতাংশ জমি রয়েছে।

    🔘 এই I/১০I/ চিহ্ন দ্বারা আমরা কি বুঝতে চাচ্ছি ?

    👉 এই চিহ্ন দ্বারা পাঁচ আনা ১০ গন্ডা এক কড়া ১ ক্রান্তির কথা বুঝানো হয়েছে।


    চিহ্ন হতে অংশ নির্ণয়

    খতিয়ানে মোট জমি ২৫০ শতাংশ । খতিয়ানে অংশ বন্টনের সময় সর্বনিম্ন একক হিসাবে ক্রান্তিকে ব্যবহার করা হয়েছে। সুতরাং সকল অংশ বা চিহ্নকে ক্রান্তিতে প্রথমে পরিণত করতে হবে।

    🔘 আসুন I/১০I/ কে ক্রান্তিতে পরিণত করি।

    👉 এই চিহ্ন দ্বারা এখানে পাচ আনা ১০ গন্ডা এক কড়া ১ ক্রান্তির কথা বুঝানো হয়েছে।

    পাচ আনা = ৫ x ২০ = ১০০ গন্ডা

    সুতরাং, মোট গন্ডা ১০০ + ১০ = ১১০ গন্ডা

    আমরা জানি ৪ কড়ায় ১ গন্ডা

    সুতরাং, ১১০ গন্ডা = ৪ x ১১০ = ৪৪০ কড়া

    তাহলে, মোট কড়া হলো ৪৪০ + ১ = ৪৪১ কড়া


    আমরা জানি ৩ ক্রান্তি = ১ কড়া

    সুতরাং, ৪৪১ কড়া = ৩ x ৪৪১ = ১৩২৩ ক্রান্তি

    তাহলে, মোট ক্রান্তি ১৩২৩ + ১ = ১৩২৪ ক্রান্তি

    সুতরাং, I/১০I/ দ্বারা ১৩২৪ ক্রান্তিকে বুঝানো হয়েছে


    আমরা জানি ১৬ আনা = ৩৮৪০ ক্রান্তি

    মোট জমি = ১৬ আনা = ২৫০ শতাংশ

    সুতরাং, ৩৮৪০ ক্রান্তি = ২৫০ শতাংশ

    কিন্তু, আমাদের খতিয়ানে আছে, ১৩২৪ ক্রান্তি

    অর্থাৎ, ৩৮৪০ ক্রান্তির মধ্যে নন্দলাল বাবুর অংশ ১৩২৪ ক্রান্তি

    সুতরাং, ১৩২৪ ক্রান্তি সমান কত শতাংশ তা আমাদের বের করতে হবে

    আমরা জানি ৩৮৪০ ক্রান্তি = ষোল আনা = ২৫০ শতাংশ জমি

    সুতরাং, ১৩২৪ ক্রান্তি = (২৫০ x ১৩২৪)/৩৮৪০ = ৮৬.১৯৭৯ শতাংশ ।

    সুতরাং, উক্ত খতিয়ানে নন্দলাল বাবুর অংশ হবে ৮৬.১৯৭৯ শতাংশ।


    Post a Comment

    0 Comments
    * Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.