class 11 political science chapter 2 part 2 WBCHSE

 


  অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি একটি বা দুটি বাক্যে উত্তর দাও :

 1. সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সদস্যপদ গ্রহণ করা কি বাধ্যতামূলক ?

 👉 না , সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সদস্যপদ গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক নয় ।


 2. সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কী নেই ?

 👉 সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ও সার্বভৌমিকতা নেই |


 3. রাষ্ট্র ও অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে যে কোনো একটি পার্থক্য উল্লেখ করো ।

 👉 মানবসমাজের ঐতিহাসিক বিবর্তনের এক বিশেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছিল । কিন্তু অন্যান্য সংগঠনগুলির উৎপত্তি নেহাতই স্বেচ্ছামূলক |


 4. সংঘ কাকে বলে ?

 👉 কোনো বিশেষ একটি বা কয়েকটি উদ্দেশ্যসাধনের জন্য কিছু সংখ্যক ব্যক্তি সংঘবদ্ধ হলে তাকে সংঘ বলা হয় |


 5. রাষ্ট্র ও অন্যান্য সংঘের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণ করার প্রধান উপাদান কী ?

 👉 রাষ্ট্র ও অন্যান্য সংঘের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণ করার প্রধান উপাদান হল সার্বভৌমত্ব ।


 6. সংঘ ও রাষ্ট্রের মধ্যে সর্বপ্রধান পার্থক্যটি কী ?

 👉 সংঘ ও রাষ্ট্রের মধ্যে সর্বপ্রধান পার্থক্য হল - সংঘের সার্বভৌমিকতা নেই , রাষ্ট্রের সার্বভৌমিকতা আছে ।


 7.রাষ্ট্র ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা সামাজিক সংগঠনের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যগুলি আলোচনা করো ।

 👉 রাষ্ট্রও সামাজিক সংগঠনের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য

      আধুনিক  রাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সংগঠনের পাশাপাশি অন্যান্য সামাজিক গঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে । প্রতিষ্টান হিসেবে রাষ্ট্র ও অন্যান্য সামাজিক সংগঠনের মধ্যে বেশ কিছু সাদৃশ্য বা বৈশাদৃশ্য বিদ্যমান ।

  সাদৃশ্য -

    [ 1 ] সমাজবোধ : রাষ্ট্র ও অন্যান্য সামাজিক সংগঠন — এ সবেরই সৃষ্টি হয়েছে মানুষের সমাজবোধ থেকে ।

    [ 2 ] সদস্যসংখ্যা : রাষ্ট্রের জনসমষ্টির মতো অন্য সামাজিক সংগঠনগুলিরও নির্দিষ্ট সদস্য রয়েছে ।

    [ 3 ] শৃঙ্খলা রাষ্ট্রের সদস্য হিসেবে নাগরিকরা রাষ্ট্রীয় আইনকানুন মেনে চলতে বাধ্য হয় । একইভাবে সংগঠনের সদস্যরাও সংগঠন প্রণীত নিয়মকানুন মেনে চলে ।

    [ 4 ] পরিচালন পদ্ধতি : সরকার হল রাষ্ট্রের পরিচালক , তেমনই সামাজিক সংগঠনগুলি চালনা করেন পরিচালকমণ্ডলী ।

    [ 5 ] কর্তব্য : নাগরিকরা যেভাবে রাষ্ট্রের কাছ থেকে সুযোগসুবিধা ও অধিকার ভোগের বিনিময়ে নির্দিষ্ট কর্তব্য পালন করে , তেমনই সংগঠনের সদস্যরাও সংগঠনের সুযোগসুবিধা ভোগের বিনিময়ে কয়েকটি নিদিষ্ট কর্তব্য পালন করে ।

    [ 6 ] বিবর্তন সামাজিক বিবর্তনের একটি বিশেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রের উদ্ভব হয় । একইভাবে অন্য সামাজিক সংগঠনগুলিও সমাজবিবর্তনের ধারায় জন্ম লাভ করে ।


   বৈসাদৃশ্য :-

বিষয় রাষ্ট্র সামাজিক সংগঠন
  1. উৎপত্তি উৎপত্তিগত দিক থেকে বলা যায় , মানবসমাজের ঐতিহাসিক বিবর্তনের এক বিশেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছিল । সামাজিক সংগঠনগুলির উৎপত্তি নেহাতই স্বেচ্ছামূলক ।
  2. সদস্যগন রাষ্ট্রের মধ্যে বসবাসকারী প্রায় সব মানুষই রাষ্ট্রের সদস্য । রাষ্ট্রের সদস্যপদ বাধ্যতামূলক | কোনো ব্যক্তি একইসঙ্গে একাধিক রাষ্ট্রের নাগরিক হতে পারেন না । সামাজিক সংগঠনের সদস্যসংখ্যা রাষ্ট্রের সদস্যসংখ্যার এক ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ । সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণের বিষয়টি ব্যক্তির ইচ্ছাধীন । কোনো ব্যক্তি একই সঙ্গে একাধিক সংগঠনের সদস্য হতে পারেন ।
  3. উদ্দেশ্য সর্বাঙ্গীণ জনকল্যাণের জন্য রাষ্ট্রকে বহুমুখী উদ্দেশ্য পূরণ করতে হয় । সামাজিক সংগঠনগুলি একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যসাধনের জন্য গঠিত হয় । যেমন , কোনো ক্রীড়া সংগঠনের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র খেলাধুলোর বিকাশ ঘটানো ।
  4. আকৃতি আকৃতির বিচারে রাষ্ট্র বিশাল | রাষ্ট্রের তুলনায় সামাজিক সংগঠন ক্ষুদ্র ।
  5 . ভূখন্ড প্রতিটি রাষ্ট্রের একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমানা থাকে , রাষ্ট্রের যাবতীয় কর্মপরিধি সেই সীমানার মধ্যে আবদ্ধ । কোনো কোনো সামাজিক সংগঠনের কর্মপরিধি পৃথিবীর এক দেশ থেকে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে যেতে পারে । উদাহরণস্বরূপ , রামকৃস্ন মিশনের কথা বলা যায়
  6. স্থায়িত্ব রাষ্ট্র চিরস্থায়ী প্রতিষ্ঠান , এর একটা সুষ্ঠু ধারাবাহিকতা আছে | সামাজিক সংগঠনগুলি ক্ষণস্থায়ী ।
  7. সার্বভৌম ক্ষমতা সার্বভৌম ক্ষমতা রাষ্ট্রের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য , সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী না হলে কোনো প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্র বলা যায় না । সামাজিক সংগঠনগুলির ক্ষেত্রে সার্বভৌম ক্ষমতার প্রশ্ন অবাস্তব ।
  8. অধীনতা রাষ্ট্র কোনো সংগঠনের অধীনে থাকে না । সামাজিক সংগঠনগুলি রাষ্ট্রের অধীন | যে - কোনো সংগঠনকে রাষ্ট্রের নিয়মকানুনের প্রতি অনুগত থাকতে হয় |
  9. অনুমোদন রাষ্ট্রের সৃষ্টি কোনো সামাজিক সংগঠনের অনুমোদন বা উদ্যোগের ওপর নির্ভর করে না । রাষ্ট্রের অনুমোদন ও উদ্যোগের মাধ্যমে সামাজিক সংগঠনগুলির জন্ম হয় ।
  10. মানব জীবনে অভাব রাষ্ট্র প্রধানত মানবজীবনের বাহ্যিক দিকটিকে নিয়ন্ত্রণ করে । মানুষের অন্তজীবনের বিকাশে সামাজিক সংগঠনের প্রভাব অনেক বেশি গভীর | ম্যাকাইভার বলেছেন , পেনসিল কাটার জন্য কুঠার যেমন অনুপযুক্ত , ঠিক তেমনই মানুষের অন্তর্জীবনের সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলির বিকাশে রাষ্ট্রও অনুপযুক্ত ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় , রাষ্ট্র ও সামাজিক সংগঠনের মধ্যে মৌলিক প্রভেদ থাকলেও মানবজীবনের বিকাশে উভয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য । বার্কারের মতে , রাষ্ট্রীয় জীবন ও সামাজিক জীবন পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত , এরা একে অপরের পরিপূরক ।

 7.
 
>☀ সম্মিলিত জাতিপুঞ্জকে রাষ্ট্র বলা যায় কি ?

 👉
 সম্মিলিত জাতিপুঞ্জকে রাষ্ট্র বলা যায় কি না :-

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ রাষ্ট্রের মতো একটি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সম্মিলিত জাতিপুঞ্জকে রাষ্ট্র বলা যাবে কি না সে সম্পর্কে প্রশ্ন জাগে | জাতিপুঞ্জ রাষ্ট্র কি না সে সম্পর্কে মতামত দিতে হলে দেখা দরকার রাষ্ট্র গঠনের জন্য যে চারটি উপাদানের প্রয়োজন , যেমন— জনসংখ্যা , নির্দিষ্ট ভূখণ্ড , সরকার ও সার্বভৌমিকতা , এগুলি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের আছে কি না ।

 [ 1 ] জনসংখ্যা : রাষ্ট্র গড়ে ওঠার জন্য জনসংখ্যা আবশ্যক । কারণ , জনসংখ্যা ছাড়া রাষ্ট্রের কল্পনা করা যায় না । কিন্তু সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সেই অর্থে জনসংখ্যা নেই । কারণ , জনগণনার পরিসংখ্যানে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের জনসংখ্যার কোনো উল্লেখ নেই । জাতিপুঞ্জের কর্মচারী হিসেবে যাঁরা কাজ করেন তারাও অন্য দেশের নাগরিক ।

 [ 2 ] নির্দিষ্ট ভূখণ্ড : রাষ্ট্র গড়ে ওঠার দ্বিতীয় অপরিহার্য উপাদান হল নির্দিষ্ট ভূখণ্ড । সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ড নেই । পৃথিবীর মানচিত্রে জাতিপুঞ্জের অবস্থানের কোনো উল্লেখ নেই । জাতিপুঞ্জের কার্যাবলি পরিচালনার জন্য জাতিপুঞ্জের বিভিন্ন সংস্থার দফতরগুলি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থিত ।

 [ 3 ] সরকার : রাষ্ট্র গঠনের জন্য তৃতীয় উপাদান হল সরকার । সরকার ছাড়া রাষ্ট্রের কল্পনা করা যায় না । কারণ রাষ্ট্রের কার্যাবলি সরকারের মাধ্যমেই পরিচালিত হয় । জাতিপুঞ্জের কার্যাবলি পরিচালনার জন্য মহাসচিবের নেতৃত্বে একটি পরিচালকমণ্ডলী আছে । অনেকে জাতিপুঞ্জের এই পরিচালকমণ্ডলীকেই সরকার বলে অভিহিত করেন ।

 [ 4 ] সার্বভৌমিকতা : রাষ্ট্র গঠনের জন্য সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সার্বভৌমিকতা । সার্বভৌমিকতা ছাড়া কোনো রাষ্ট্র কল্পনাই করা যায় না । সার্বভৌমিকতা বলতে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত , অপ্রতিহত ও অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতাকে বোঝায় | সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ হল কতকগুলি সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংগঠন । জাতিপুঞ্জ তার সদস্যরাষ্ট্রগুলিকে কোনো নির্দেশ দিতে পারে না , কেবল অনুরোধ করে | সদস্যরাষ্ট্রগুলি সেই অনুরোধ মানতেও পারে , নাও মানতে পারে । সুতরাং , সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সার্বভৌমিকতা নেই ।

 মূল্যায়ন : উপরের বিশ্লেষণ থেকে এটা স্পষ্ট যে , কোনো প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্র বলে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য যে চারটি উপাদান আবশ্যক তার মধ্যে জাতিপুঞ্জের একটি উপাদান , অর্থাৎ সরকার আছে, অন্য তিনটি উপাদান, যথা - জনসংখ্যা, নিদিষ্ট ভূখন্ড ও সার্বভৌমিকতা নেই । সুতরাং, সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ রাষ্ট্র নয় ।


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.