নৈরাশ্যে পীড়িত হলেও শেষে আশাবাদকেই অবলম্বন করেছেন’ – আলোচনা করো ।

১১. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় কবি নৈরাশ্যে পীড়িত হলেও শেষে আশাবাদকেই অবলম্বন করেছেন’ – আলোচনা করো ।


উত্তরঃ  কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় বর্তমান সংকটময় বিশ্বের ভয়াবহ প্রতিচ্ছবিটি ফুটে উঠেছে । রাষ্ট্রীয় নির্যাতন, রাজনৈতিক ভ্রষ্টাচার, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ধর্মীয় সন্ত্রাস আর সামাজিক অবক্ষয়ে সাধারণ মানুষ আজ দিশেহারা । গোটা পৃথিবীজুড়ে সে আজ হানাদারি ঘাতকের হাতের পুতুল । নিরাশ্রয় মানুষের প্রতিকূলতা ও অসহায়তা এতটাই প্রকট্রট যে, সে নিষ্পাপ শিশুকেও রক্ষা করতে অক্ষম এমনকি নিজের বাঁচা - মরার ভেদরেখাটিও এখন তার কাছে অস্পষ্ট আপসকামী দুর্বল মানুষ, নারকীয় প্রবলের হাতে আজ গচ্ছিত রেখেছে আপন ইতিহাস । নিজের শিকড়-ঐতিহ্য-আদর্শ ও স্বকীয়তা ভুলে সে অন্যায় ক্ষমতার কাছে ফুটিয়ে তুলেছে চরিত্রের দৈন্য ।

              অথচ, সে জানে তার দুঃখযন্ত্রণামাথা রক্তাক্ত অবস্থার প্রতিফলন কোথাও ঘটে না । শাসকের উপেক্ষার অহমিকা সহ্য করে দোরে দোরে কৃপালাভের আশায় ঘুরে বেড়ানোই যেন এখন হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের সুনির্দিষ্ট নিয়তি । অপরের করুণাই তার একমাত্র সম্বল । কবি এ অবস্থার অবসান চান । তিনি মানুষের এই অন্ধ - নিঃস্ব ও ফুরিয়ে যাওয়া পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজেছেন সংঘবন্ধতায় । মানবীয় বিশ্বাসের হাতে হাত রেখে পারস্পরিক সাহচর্যে যদি একাত্ম হওয়া যায়, তাহলেই বেঁচে থাকাটা আর একটু সহজ ও গভীর হয় । কারণ মানবীয় সম্পর্কের আন্তরিক বন্ধনই পারে শাসক কিংবা ক্ষমতাবানের সমস্ত চক্রান্তকে ব্যর্থ করতে । তাই কবি এভাবেই বিপন্ন সময়ের সংশয় ও নৈরাশ্য ডিঙিয়ে মুক্তির উপায় খুঁজেছেন ।
















Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.