আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় যুগযন্ত্রণার যে-নির্মম ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে বর্ণনা করো ।

১. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় কবি শঙ্খ ঘোষ সময় ও সমকাল সম্পর্কে যা বলতে চেয়েছেন, তা আলোচনা করো ।
 অথবা,
   ‘আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় যুগযন্ত্রণার যে-নির্মম ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে বর্ণনা করো ।


উত্তরঃ  শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি আমাদের পাঠ্য বইয়ের “চারপাশের পৃথিবী” ভাবমূলের অন্তর্গত ।

    বর্তমান সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা কবিকে পীড়িত করেছে । তাই মানুষের চলার পথের প্রতিকূলতা, অসহায়তা, সংশয় ও সম্ভাবনার ছবি এই কবিতায় তুলে ধরেছেন । বর্তমান সময়ে মানুষের চলার পথ বিপৎসংকুল । তাদের চারপাশে মৃত্যুর হাতছানি, প্রতিপদে বাধা আর প্রতিকূলতা । তার চলার সব পথ রুদ্ধ । তবু মানুষ এগিয়ে চলেছে । হানাদারি শত্রুর আঘাতে মানুষ নিরাশ্রয় হয়েছে । সে তার ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে গিয়ে হয়েছে ব্যর্থ । এখন সে নিজেও মৃত্যুভয়ে শঙ্কিত ও পথহারা । এমন পরিস্থিতিতে কবি ‘বেঁধে বেঁধে’ অর্থাৎ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের সংঘবন্ধ হয়ে চলার কথা বলেছেন ।

    কবির মতে, সাম্রাজ্যবাদী আর সুবিধাবাদী শক্তির কাছে আজ আমরা কোণঠাসা । আমাদের এই দুঃখযন্ত্রণার ইতিহাস হয়তো অলিখিতই রয়ে যাবে চিরকাল । অথবা‚ যদি লেখা হয় তবে তা হবে অর্ধসত্য এবং অসম্পূর্ণতায় ভরা । সাধারণ শ্রমজীবী মানুষদের চিরকাল এভাবেই ক্ষমতাবানের প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে যুঝে বেঁচে থাকতে হয় । পৃথিবীর এই জীবস্মৃত পরিস্থিতিতে অন্যের দোরে দোরে পরমুখাপেক্ষী হয়ে না-ঘুরে, নৈরাশ্য ত্যাগ করে তাই আমাদেরই একত্রিত হতে হবে । কবির আহ্বান বিবেকবান মানুষের একতা ও সাহচর্যই হবে তাদের প্রতিরোধের ভাষ্য ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.