পাঁচসালা বন্দোবস্ত কী ? ( ১৭৭২-১৭৭৭ )

পাঁচসালা বন্দোবস্ত ( ১৭৭২-১৭৭৭ )
১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা, বিহার ও উড়িষা দেওয়ানি লাভ করলেও এর প্রকৃত ব্যবস্থাপনা ছিল মোহাম্মদ রেজা খান ও সিতাব রায় নামে দু'জন দেশি কর্মচারীর হাতে । কোম্পানির পক্ষে একজন প্রতিনিধি মুর্শিদাবাদে অবস্থান করে এদের কাছ থেকে হিসাব বুঝে নিতেন এবং নবাবের সঙ্গে কোম্পানির যোগাযোগ রক্ষা করতেন ।


     ইতিমধ্যে কোম্পানি বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে শুধুমাত্র ক্ষমতা প্রয়োগ করে কিন্তু রাজস্ব শাসনের কোনো দায়িত্ব গ্রহণ করে নি । দায়িত্ববিহীন ক্ষমতা প্রয়োগের ফলে দেশের অর্থনীতি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় । এমতাবস্থায় ১৭৭১ সালের ২৮ আগস্ট কোর্ট রেজা খান ও সিতাব রায়কে অপসারণ করে সরাসরি কোম্পানিকে দেওয়ানি শাসন পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেয় । কিন্তু দায়িত্ব অর্পণ করলেও পরিচালনা সম্পর্কিত কোনো নীতিমালা কোম্পানিকে দেওয়া হয়নি । যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন পরীক্ষা - নিরীক্ষার এক পর্যায়ে প্রবর্তিত হয় পঞ্ছসালা বন্দোবস্ত ।


পঞ্ছসালা বা পাঁচসালা বন্দোবস্ত ( ১৭৭২-১৭৭৭ ) : 
    ১৭৭১ সালের ২৮ আগস্ট কোর্ট অব ডাইরেক্টর্স লিখিত পত্রে কোম্পানিকে দেওয়ানি শাসন সরাসরি গ্রহণের নির্দেশ দেয় । কিন্তু দেওয়ানি শাসন পরিচালনার ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট অভিমত ব্যক্ত করে নি । ফলে গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস নিজেই রাজস্ব সংগ্রহের ব্যাপারে একটি পরিচালনা নীতিমালা প্রণয়ন করেন । প্রচলিত বার্ষিক রাজস্ব নীতি বর্জন করে হেস্টিংস প্রস্তাব করেন পাঁচ বছর মেয়াদে ইজারাদারদের সাথে ভূমি বন্দোবস্ত করার জন্য । এটি পঞ্চসনা বা পাঁচসালা বন্দোবস্ত নামে পরিচিত ।

       হেস্টিংস পঞ্চসনা বন্দোবস্তের নীতি ঘোষণা করেন ১৭৭২ সালের ১৪ মে । গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস ও তার কাউন্সিলের চারজন সদস্য নিয়ে গঠিত হয় 'কমিটি অব সার্কিট’ ( ১৭৭২ ) । এ কমিটির দায়িত্ব ছিল পঞ্চসনা ভূমি বন্দোবস্ত সম্পন্ন করা । রাজস্ব শাসন পরিচালনার জন্য কোম্পানির প্রয়োজন ছিল রাজস্ব বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন । অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তারা ভূমি ব্যবস্থায় বিভিন্ন পরীক্ষা - নিরীক্ষা চালায় । এসব পরীক্ষা - নিরীক্ষার অন্যতম ছিল পঞ্চসনা বন্দোবস্ত ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.