১২. “যেখানে ছিল শহর
সেখানে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা ।”
উত্তরঃ চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদা জীবনযুদ্ধের একজন লড়াকু সৈনিক ।চোখের সামনে ঘটে যাওয়া দুই বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি । তাই পাঠ্য
কবিতায় তিনি যুদ্ধের যে -করুণ ও মর্মস্পর্শী ছবি এঁকেছেন তা অত্যন্ত
বাস্তবোচিত ।
‘অসুখী একজন' কবিতাটি আসলে যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে
যুদ্ধের এক শাশ্বত ভালোবাসার গল্প । কবি বীভৎসতার মাঝে প্রেম যে অনির্বাণ তা
দেখাতে গিয়ে খন্ড খন্ড যুদ্ধের চিত্র তুলে ধরেছেন । কবি তাঁর প্রিয়তমাকে
অপেক্ষায় রেখে দূরে চলে যাওয়ার পর একদিন ভয়াবহ বীভৎসতা নিয়ে যুদ্ধ নেমে এল
। মানুষ আশ্রয়হীন হল । নৃশংসতার হাত থেকে রেহাই পেল না শিশুরাও । দাবানলের মতো
যুদ্ধের আগুন সমতলে ছড়িয়ে পড়ল । ধ্বংস হল দেবালয় আর তার ভেতরের দেবতারা ।
তাদের দেবত্ব নষ্ট হল । মানুষকে তারা স্বপ্ন দেখাতে ব্যর্থ হল । কবির সেই
মিষ্টি বাড়ির ঝুলন্ত বিছানা, গোলাপি গাছ, প্রাচীন জলতরঙ্গ সব চূর্ণ ও ভস্ম হল
যুদ্ধের আগুনে । ঠিক একইভাবে শহরটাও পুড়ে গেল ।
বীভৎসতার চিহ্ন নিয়ে ছড়িয়ে - ছিটিয়ে পড়ে রইল
কাঠকয়লা, দোমড়ানো লোহা, পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ ।
শুধু সেই ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকল মেয়েটির অপেক্ষা ও অবিচল ভালোবাসা ।