১৪. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক আধুনিক যন্ত্রযুগকে মেনে নিতে চাইছেন না –মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো ।
উত্তরঃ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি
কলম’ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপান্থ কলমের উদ্ভব -বিবর্তন ও পরিণতির দীর্ঘ যাত্রাপথের এক
মনোগ্রাহী বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন ।
সুদূর অতীতে নীলনদের তীরে নলখাগড়া ভেঙে কলম বানানো থেকে
ফিনিসীয়দের মতো হাড়কে কলম হিসেবে ব্যবহার কিংবা জুলিয়াস সিজারের স্টাইলাস
নামের শলাকা, তাঁর কাল্পনিক পথ -পরিক্রমায় বাদ যায়নি কোনো কিছুই । এসবই হয়ে
উঠেছে কলমের প্রতি লেখকের আন্তরিক ভালোবাসার প্রমাণ । তিনি পরমমমতায় নিজের
ছোটোবেলার গ্রামের বাড়িতে কঞ্চি কেটে কলম এবং রান্নার কড়াইয়ের নীচের ভুসো কালি
লাউপাতা দিয়ে ঘষে জলে গুলে ও ফুটিয়ে কালি তৈরির গল্প বলেছেন ।
প্রসঙ্গক্রমে এসেছে কঞ্চি, খাগড়া কিংবা পালকের কলমের সঙ্গে বিভিন্ন
রকমের দোয়াতের প্রসঙ্গ সে -সময়ে লেখালেখি যে ছোটোখাটো একটা অনুষ্ঠান ছিল, তা
যেন আমাদের কাছে জীবন্ত হয়ে উঠেছে ।
এরপর আবিষ্কৃত হল ফাউন্টেন পেন; লেখক তার প্রেমে পড়লেন । কলমের সঙ্গে এক
চিরকালীন মানবিকতার সম্পর্কে আবদ্ধ হলেন । তারপর কালের নিয়মে হাজির হল কম্পিউটার
। দিন ফুরোল কলমের । এখন সবাই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে কম্পিউটারের সঙ্গে । কিন্তু এত
পরিবর্তনের মধ্যেও লেখক কলমকে আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে চান ।