উত্তরঃ পাবলো নেরুদার ‘অসুখী একজন’ কবিতায় প্রিয়তমের জন্য অপেক্ষারতা মেয়েটিকে অসুখী বলা হয়েছে । আবার ফিরে
আসতে উৎসুক কবি - হৃদয়ও এবং একইভাবে অসুখী ।
একদিন কবি স্বদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন । তাঁর এই নিষ্ক্রমণ চিরদিনের
জন্য । অথচ অপেক্ষমান প্রিয়তমার এ সত্য জানা নেই । যদিও জীবন নিজস্ব ছন্দে
বয়ে চলে । দৈনন্দিনতার গতি কবির স্মৃতিকে ক্রমশ ফিকে করে তোলে । বছর গড়ায় ।
কিন্তু ভালোবাসার মেয়েটির কাছে এই অন্তহীন অপেক্ষা গভীর ও ভারী পাথরের আঘাতের
মতোই শ্বাসরুদ্ধকারী হয়ে ওঠে । এরপর যুদ্ধের বীভৎসতা
সমস্ত সমতলকে গ্রাস করে । ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ হয় দেবতা ও দেবালয় । ধ্বংসের
লেলিহান আগুনে ক্রমে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যায় কবির প্রিয় বাড়ি,
বারান্দার ঝুলন্ত বিছানা, গোলাপি গাছ, করতলের মতো পাতা চিমনি, প্রাচীন
জলতরঙ্গ— এই সব কিছু । মানুষ তার আশ্রয় হারায় । যুদ্ধের নৃশংসতায় শিশুরাও খুন হয় । শহরের বদলে সেখানে ছড়িয়ে
থাকে কাঠকয়লা, দোমড়ানো লোহা পাথরের
মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের কালো দাগ । শুধু অপেক্ষারতা সেই মেয়েটিকে কোনো
বিনাশ স্পর্শ করতে পারে না । সমূহ ধ্বংস আর বর্বরতার মধ্যেও অসুখী মেয়েটি তার
ভালোবাসার আর্তি ও আকুতিকে অনির্বাণ দীপশিখার মতো জ্বালিয়ে রাখে ।