২. ‘আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই ।’– কালি তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে যা জান লেখো ।
উত্তরঃ কালি-কলমের অতীত সম্পর্কে
আলোচনা করতে গিয়ে লেখক শ্রীপান্থ বাঁশের কঞ্চির কলম তৈরির কথা বলেছেন ।
একইসঙ্গে সেই কঞ্চির কলম যে - কালিতে ডুবিয়ে লেখা হত সেই
কালি কীভাবে তৈরি করা হত তাও বলেছেন । লেখকরা নিজেরাই এই কালি তৈরি করলেও মা,
পিসিদের সাহায্যও নিতেন । প্রবন্ধে লেখক কালি তৈরির যে দু-রকম পদ্ধতির কথা বলেছেন
তার মধ্যে প্রথমটি আয়োজন -নির্ভর; সেইসব উপকরণ লেখকদের পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন
ছিল । প্রাচীন এই পদ্ধতিতে তিল, ত্রিফলা ( হরীতকী, বহেড়া, আমলকী) লোহার
পাত্রে ছাগলের দুধে ভিজিয়ে রাখতে হত । তারপর একটি লোহার দণ্ড দিয়ে সেটি ভালো
করে ঘষে নিতে হত । এই কালি এতটাই টেকসই হত যে, লেখার পাতা ছিঁড়লেও কালি উঠত না ।
লেখকদের কালি তৈরির পদ্ধতিটি ছিল বেশ সহজ । বাড়িতে কাঠের
উনুনে যে - কড়াইয়ে রান্না হত তার তলায় কালি জমত; সেই কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে
তুলে নিয়ে পাথরের বাটিতে রাখা জলে গুলে নেওয়া হত । কেউ কেউ এর মধ্যে হরীতকী
ঘযতেন ও পোড়া আতপচাল গুঁড়িয়ে মেশাতেন । সবশেষে খুস্তিকে লাল করে পুড়িয়ে সেই
জলে ডোবালে জল ফুটে উঠত । ঠান্ডা হলে ন্যাকড়ায় হেঁকে দোয়াতে ভরে নেওয়া হত ঘরে
তৈরি এই কালি ।