১১. ‘সেই হোক তোমার সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী ।’ – ‘পুণ্যবাণী’ টি কী ? কেন সেই
পুণ্যবাণীর প্রয়োগ অনিবার্য হয়ে উঠেছে ?

অথবা,
যুগান্তের কবির বক্তব্যের সার্থকতা কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো ।
উত্তরঃ দুর্গম অরণ্যে - ঘেরা
আফ্রিকা মূল ভূখণ্ড থেকে বহুদূরে অবস্থিত । আধুনিক সভ্যতা ও জ্ঞানের আলো থেকে সে
বঞ্চিত । দুর্গমতার কারণে উনিশ শতকের আগে পর্যন্ত আফ্রিকার প্রাকৃতিক সম্পদ
ও নিজস্ব সংস্কৃতি বাকি বিশ্বের কাছে অজানাই রয়ে গেছে তার রহস্যময় অরণ্যের মতোই
।
কবি এক ভয়াবহ সংকটের প্রাক্কালে এই কবিতাটি রচনা করেন
ঔপনিবেশিক এবং ফ্যাসিস্ট শক্তির স্বার্থের সংঘাত , সেসময় জন্ম দিয়েছিল এক
ভয়াবহ সমাজ - রাজনৈতিক অস্থিরতা । যা ক্রমশ সমস্ত পৃথিবীকে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের
দিকে ঠেলে দেয় । হিংসার এমন চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ দেখে ব্যথিত কবি আফ্রিকাকে
নিপীড়িত মনুষ্যত্বের প্রতিভূ হিসেবে তুলে ধরেন । কারণ সাম্রাজ্যবাদী শ্বেতাঙ্গ
শাসকের সীমাহীন ।
বর্বরতায় এ মহাদেশ বারবার রক্তাক্ত হয়েছে । তাদের কাঁটা - মারা
জুতোর দাগ, অসহায় আফ্রিকার হৃদয়ে এঁকে দিয়েছে কলঙ্কের চিরচিহ্ন । আর আফ্রিকাকে
কান্না - ঘাম আর রক্তে রাঙিয়ে নির্লজ্জ শাসক নিজ দেশে করেছে সুন্দরের আরাধনা ।
সেখানে নিরাপদ - নিরুপদ্রব জীবনে চোখে পড়ে না কোনো খেদ বা আক্ষেপ ।
কবি টের পান আফ্রিকাকে নিপীড়িত মনুষ্যত্বের প্রতিভূ হিসেবে
তুলে ধরেন । কারণ সাম্রাজ্যবাদী শ্বেতাঙ্গ শাসকের সীমাহীন । ঘৃণ্য কৃতকর্মের
একমাত্র প্রায়শ্চিত্ত । যুগান্তের কবি সেই মানবিকতার অর্ঘ্য সাজিয়েই, শেষ
পুণ্যবাণীতে সবাইকে দীক্ষিত করতে চেয়েছেন ।