উপনিবেশবাদের রাজনৈতিক ভিত্তি সংক্ষেপে আলোচনা করো ।

☀ উপনিবেশবাদের রাজনৈতিক ভিত্তি সংক্ষেপে আলোচনা করো ।


উপনিবেশ স্থাপনের রাজনৈতিক ভিত্তি :–

                            ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি কর্তৃক ঔপনিবেশিক সম্প্রসারণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের রাজনৈতিক - আধিপত্যের প্রসার ঘটানো । আর মূল কারণগুলি ছিল—

 (১) জাতীয় শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ :–
            সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের পথপ্রদর্শক ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স মনে করত যে, সাম্রাজ্যবাদের প্রসার জাতীয় শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি । জাতীয় মর্যাদা এর মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় এ কারণে তারা জাতীয় মর্যাদা বৃদ্ধির জন্যই উপনিবেশ স্থাপনে সচেষ্ট হয় ।


 (২) ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা :–
              ইটালি, জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ শিল্পে কোনো উবৃত্ত উৎপাদন না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই তারা উপনিবেশ স্থাপনে আগ্রহী হয় ।


 (৩) সামরিক ক্ষেত্রে প্রাধান্য স্থাপন :–
                তারা এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে উপনিবেশ স্থাপন করে সেখানে নৌ ও সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে । পরবর্তীকালে তাদের এই সামরিক শক্তিবৃদ্ধি সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার ইন্ধন জোগায় ।


 (৪) বৃহৎ শক্তি হয়ে ওঠার তীব্র আকাঙ্ক্ষা :–
                        উপনিবেশ স্থাপনের পিছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল ইউরোপীয় দেশগুলির বৃহৎ শক্তি হয়ে ওঠার তীব্র আকাঙ্ক্ষা । ইউরোপীয় শক্তিগুলি উপনিবেশ স্থাপনে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় এবং বৃহৎ শক্তি হয়ে ওঠার চেষ্টা করে ।


 (৫) রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল :–
                  ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি অপেক্ষাকৃত দুর্বল রাষ্ট্রগুলিকে নিজেদের উপনিবেশে পরিণত করে । তখন তাদের প্রধান লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য থাকে সেখানকার রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করা । আর সেই সূত্রে উপনিবেশের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করা ।


 পরিশেষে বলা যায়, ইউরোপের সাম্রাজ্যবাদী বিভিন্ন রাষ্ট্র এশিয়া , আফ্রিকা ও আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের পাশাপাশি যেসব স্থানে দীর্ঘকাল ধরে নির্বিচারে অর্থনৈতিক শোষণ ও লুণ্ঠন চালায় । বিদেশি ঔপনিবেশিক শোষণে উপনিবেশগুলির জনগণ সীমাহীন দুর্দশা অত্যাচার ও বঞ্চনার শিকার হয় ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.