জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো ।

৮. নতুন মেসোর চরিত্রটি আলোচনা করো ।


উত্তরঃ–  আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপনের মধ্যেও সব শিশুর মতোই আশা - আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন - স্বপ্নভঙ্গ, কল্পনা - বাস্তব, আনন্দ - অভিমানের টানাপোড়েন দেখা যায় । তবে তার চরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য তাকে আলাদা করে রাখে ।

     তপন মনে মনে তার কল্পনার জগৎকে সাজিয়ে নিতে ভালোবাসে । তাই তার কল্পনার জগতে লেখকরা ছিলেন ভিন গ্রহেরপ্রাণী । সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের বুঝি বা কোনো মিলই নেই ।

     সাহিত্যের প্রতি তপনের ঝোঁক ছোটোবেলা থেকেই । সে অনেক গল্প শুনেছে ও পড়েছে । লেখকদের সম্পর্কেও তার কৌতূহল অসীম । ছোটোমেসোকে দেখে তার মনেও লেখক হওয়ার ইচ্ছে জাগে । উৎসাহী হয়ে বেশ কয়েকটা গল্পও লিখে ফ্যালে ।

    বয়স অনুপাতে তপন একটু বেশিই সংবেদনশীল । সমবয়সি ছেলেমেয়েদের মতো রাজারানি, খুন - জখম ও অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে না - লিখে, তার ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি নিয়ে গল্প লেখে । তা নিয়ে বাড়ির লোকের ঠাট্টা তামাশা বা মাসি - মেসোর উৎসাহদান কোনোটাতেই সে প্রকাশ্যে তার প্রতিক্রিয়া দেখায় না । এটা তার অন্তর্মুখী স্বভাবেরই পরিচয় । তাই কারেকশনের নামে ছোটো মেসো তার গল্পটা আগাগোড়া বদলে দিলে তপন তার কষ্ট লুকোতে ছাদে গিয়ে কাঁদে ।

    তপনের আত্মমর্যাদা বোধ ছিল প্রবল । তার গল্প ছোটোমেসো কারেকশনের নাম করে আগাগোড়াই বদলে দিলে তপনের লেখকসত্তা আহত হয় । সে মনে মনে শপথ নেয়, ভবিষ্যতে লেখা ছাপাতে হলে সে নিজে গিয়ে লেখা দিয়ে আসবে পত্রিকা অফিসে । তাতে যদি তার মতো নতুন লেখকের লেখা ছাপা না হয়, তাতেও দুঃখ নেই ।








পূর্ববর্তী প্রশ্ন


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.