"গণতন্ত্রের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি ব্যাখ্যা" class11

                      Xi political science

    গণতন্ত্রের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি ব্যাখ্যা,




গণতন্ত্রের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি ব্যাখ্যা করো(গণতন্ত্রের পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি)

☀ প্রশ্নঃ- গণতন্ত্র কাকে বলে? গণতন্ত্রের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি ব্যাখ্যা করো(গণতন্ত্রের পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি)।

👉 উঃ- গণতন্ত্রের সংজ্ঞাঃ- মার্কিন রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকনের মতে “গণতন্ত্র হল জনগণের দ্বারা, জনগনের জন্য, জনগণের শাসন”।

লিংকনের এই সংজ্ঞাটির ব্যাখ্যা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

সুইজি ও অন্যান্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর মতে, লিংকনের দেওয়া সংজ্ঞা অণুসারে জনগনের শানস বলতে বোঝায় যে, জনগণ হল সমগ্র শাসনব্যাবস্থার মূল উৎস এবং জনগণ ও সরকার পরস্পর বিচ্ছিন্ন নয়।

অন্যদিকে জনগণের ,্দ্বারা শাসন বলতে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরিচালিত শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়।

জনগণের জন্য শাসনের অর্থ হল গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা আপামর জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করবে।

ক)  গণতন্ত্রের সুবিধাঃ-গণতন্ত্রের যেসব সুবিধা বা গুণের কথা বলা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

১> সার্বভৌমত্বের বাস্তবায়নঃ-গণতন্ত্রে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। জনগণ এখানে সমগ্র রাষ্ট্রক্ষমতার মূল উৎস।

গণতন্ত্রে জনগণের সম্মতি নিয়ে সরকার গঠিত হয়।

সরকার যাবতীয় কাজের জন্য জনগণের কাছে দায়িত্বশীল থাকে।

২।স্বাভাবিক অধিকার তত্ত্বের রূপায়ণঃ-স্বাভাবিক অধিকারের তত্ত্ব অণুসারে প্রতিটি ব্যক্তি তার জীবন সম্মত্তি ও স্বাধীনতার যে অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে তা একমাত্র গণতান্ত্রিক শামনব্যবস্থায় বাস্তবায়িত হতে পারে।

৩।আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাঃ-গণতন্ত্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ফাইনারের মতে একমাত্র গণতন্ত্রের আইনের যথাবিহিত পদ্ধতি ছাড়া ব্যক্তিজীবনে হস্তক্ষেপ করা যায় না।

৪। সর্বাধিক ব্যক্তির সর্বাধিক কল্যাণঃ- আদর্শবাদ অণুসারে গণতান্ত্রিক পরিবেশে ব্যক্তি তার আত্মবিকাশের সবচেয়ে বেশি সুযোগ পায়।

অন্যদিকে হিতবাদী তত্ত্বের মূলনীতি-সর্বাধিক ব্যক্তির কল্যাণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপায়িত হয়।

৫। স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বিচারবিভাগের উপস্থিতিঃ-গণতন্ত্রের একটি বড়ো গুণ হল এখানে স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বিচারবিভাগের অস্তিত্ব বজায় থাকে।

সংবিধানের রক্ষাকর্তা ও ব্যাখ্যাকর্তা এবং নাগরিক অধিকারের সংরক্ষক হিসাবে বিচারবিভাগ গণতন্ত্রে এক উজ্জল ভূমিকা পালন করে।

এছাড়াও গণতন্ত্রের যে সুবিধাগুলি রয়েছে তাহল- ৬। সাম্য মৈত্রী ও স্বাধীনতার নীতি অনুসরণ, ৭। ন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠা, ৮।ব্যক্তিত্বের সর্বাঙ্গীণ বিকাশ, ৯। রাজনৈতিক চেতনার বৃদ্ধি, ১০। স্বৈরাচারের সম্ভাবনা হ্রাস পাওয়া, ১১। বিপ্লবের শঙ্কা হ্রাস পাওয়া।

খ)  গণতন্ত্রের অসুবিধাঃ-গণতন্ত্র সম্পূর্ণ ত্র“টিমুক্ত শাসনব্যবস্থা নয়।

গণতন্ত্রের অসুবিধার দিকগুলি হল-

1) দরিদ্র, অজ্ঞ ও অযোগ্যদের শাসনব্যবস্থাঃ- রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লেকি গণতন্ত্রের সমালোচনা করতে গিয়ে মন্তব্য করেছেন যে, গণতন্ত্র হল সবচেয়ে দরিদ্র, অজ্ঞ ও অযোগ্য ব্যক্তির শাসনব্যাবস্থা।

কারণ গণতন্ত্রে এরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।

2) উৎকর্ষের পরিবর্তে সংখ্যার প্রাধান্য – গণতন্ত্র সংখ্যা গরিষ্ঠের শাসন হওয়ায় এখানে গুণের তুলনায় সংখ্যার প্রাধান্য স্বীকৃত হয়।

এখানে গুণগত উৎকর্ষ গুরুত্বহীন।

3) সরকারের স্থায়িত্বহীনতাঃ- গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনগনের বিভিন্ন রকমের স্বার্থ জাতপাতের বৈষম্য, গোষ্ঠীগত ও আঞ্চলিক এবং ধর্মীয় সংকীর্নতা ইত্যাদি পরস্পরবিরোধী বিষয় সক্রিয় থাকায় সরকারের স্থায়িত্ব ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।

4) রক্ষনশীল শাসনব্যবস্থা – সামলোচকদের মতে, গণতন্ত্র যেহেতু মুর্খ ও অযোগ্য ব্যক্তিদের শাসন, তাই এই ধরনের শাসনব্যবস্থাকে রক্ষনশীল বলা যায়।

কারণ মুর্খ ও অযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে কোনো প্রগতিশীল চিন্তার উন্মেষ ঘটে না।

এছাড়াও এই শাসন ব্যবস্থায় যে অসুবিধাগুলি লক্ষ করা যায় তা হল-

ঙ) আমলাতন্ত্রের প্রাধান্য , চ) ব্যয়বাহুল্য, ছ)সংখ্যালঘুর স্বার্থকে উপেক্ষা ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.