📌 প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে শিল্পে অগ্রগতির কারণ কী ছিল ? এই সময়
শিল্পের বিকাশে সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছিল ?
অথবা,
1941 থেকে 1945 খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তীকালে ভারতে শিল্পের অগ্রগতির
কারণগুলি কী ছিল ? ভারতে শিল্পোন্নতিতে বিভিন্ন শিল্প কমিশনের ভূমিকা আলোচনা
করো ।
👉🏼 সূচনা :-
ভারতে কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরবর্তীকালে ব্রিটিশ
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এদেশে শিল্পের বিকাশে যথেষ্ট উদ্যোগী হয়েছিল না । প্রথম
বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতে শিল্পের দ্রুত প্রসার ঘটে । এই সময় ভারতে শিল্পায়নের
কয়েকটি কারণ ছিল —
ক. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব :-
১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হলে
ব্রিটেনে কল-কারখানাগুলো যুদ্ধ সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । ফলে বাজেয়াপ্ত
পণ্য উৎপাদনে ভারতে পর্যাপ্ত শিল্প সামগ্রী রপ্তানি করতে ব্যর্থ হয় ।
খ. সংরক্ষণ নীতি :-
১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার
এদেশে লোহা, কাগজ, দেশ্লাই প্রভৃতি আমদানিকৃত মালের উপর চড়া হারে শুল্ক
চাপিয়ে ভারতীয় শিল্পকে রক্ষা করার চেষ্টা করে ।
গ. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব :-
জাপান দ্বিতীয়
বিশ্ব যুদ্ধে যোগ দেওয়ার ফলে এবং সমুদ্রপথে ব্রিটেন থেকে শিল্পদ্রব্য আমদানি
ব্যহত হলে ভারতে অতি দ্রুত শিল্প গড়ে উঠতে থাকে ।
ঘ. ভারতীয় শিল্পপতিদের উদ্যোগ :-
বিংশ শতকের শুরু
থেকে বিভিন্ন ভারতীয় শিল্পপতি শিল্পায়নে মূলধন বিনিয়োগ করতে শুরু করে । ফলে
ভারতীয় শিল্পের বিকাশ সম্ভব হয়ে ওঠে ।
শিল্পের অগ্রগতিতে সরকারি উদ্যোগ/বিভিন্ন শিল্প কমিশনের ভূমিকা :-
ক. শিল্প কমিশন নিয়োগ :-
ভারতীয় শিল্পের প্রসার ও ব্যবসা-বাণিজ্যে
ভারতীয় মূলধন বিনিয়োগের সম্ভাবনা বিচার করার উদ্দেশ্যে ভারত সরকার একটি শিল্প
কমিশন গঠন করে ।
খ. কমিশনের সুপারিশ :-
শিল্প কমিশন ভারতে শিল্পের
প্রসারের জন্য সরকারকে "উৎসাহমূলক হস্তক্ষেপ" নীতি গ্রহণের সুপারিশ করে । এই
নীতির শর্তগুলি হলো —
১. সর্বভারতীয় ও প্রাদেশিক শিল্প বিভাগের প্রতিষ্ঠা ।
২. বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি চাকরি গুলির শস্য সমন্বয় ।
৩.কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ ।
৪. যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন প্রভৃতি ।
মূল্যায়ন :-
১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের যে কয়েকটি শিল্প যুদ্ধের সুযোগে
গড়ে ওঠে সেগুলির উন্নতি সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির ফলে ব্যাহত হয় । এই শিল্প
গুলির উপর চাপানো হয় । ফলে ভারতে শিল্পায়নের গতি আবার হ্রাস পায় ।