পলাশি ও বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল তুলনামূলক আলোচনা করো ।

📌 পলাশি ও বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল তুলনামূলক আলোচনা করো ।

👉🏼 ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন ভাগীরথীর তীরে পলাশির আম্রকাননে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদদৌলার সঙ্গে ক্লাইভের নেতৃত্বে ইংরেজদের যে লড়াই হয়েছিল তা ভারতের ইতিহাসে পলাশির যুদ্ধ নামে পরিচিত ।

 খন্ডযুদ্ধ :-
      পলাশির যুদ্ধের হতাহতের সংখ্যা ও ব্যপকতার দিক থেকে এটি ছিল একটি খন্ড যুদ্ধ মাত্র । এই যুদ্ধে নবাবের পক্ষে  ষ৫০০ জধ এবং ইংরেজদের পক্ষে ২২ জন সেনার মৃত্যু হয় ।

 স্বাধীন নবাবি শাসনের অবসান :-
         পলাশির যুদ্ধে হেরে গিয়ে ভারতের সর্বাধিক সমৃদ্ধ অঞ্ছল সর্বপ্রথম বিদেশি শক্তির অধীনস্থ হয়  ইংরেজরা প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হয় ।

কোম্পানির সাম্রাজ্য বিস্তার :-
          পলাশির যুদ্ধে জয়লাভ করে ইংরেজি কম্পানি ভারতে নিজেদের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় ।

পলাশির লুণ্ঠন :-
        পলাশির যুদ্ধের পর বাংলার নতুন নবাব ইংরেজ কোম্পানির কর্মচারীদের প্রচুর অর্থ পুরস্কার  দিতে বাধ্য হয় ।

ফরাসিদের ভাগ্য নির্ধারণ :-
          পলাশির যুদ্ধের ফলে বাংলা থেকে ফরাসিরা বিতাড়িত হয় । ফলে তাদের মনোবল ভেঙে যায় ।

নতুন যুগের সূচনা :-
             পলাশি যুদ্ধের পর ইংরেজরা এদেশের সমাজ ও সভ্যতায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করায় পাশ্চাত্য শিক্ষা ও ভাবধারার অনুপ্রবেশ ঘটে ।


   বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল :-
               ১৯৬৪ খ্রীষ্টাব্দে ২২ অক্টোবরঃ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ্ আলম, অযোধ্যার নবাব সুজা-উদ্দৌলা এবং বাংলার নবাব মীরকাশিমের মিলিত বাহিনীর সঙ্গে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বক্সার প্রান্তের যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তা বক্সারের যুদ্ধ নামে পরিচিত ।

ব্রিটিশ প্রভুত্ব :-
     পলাশির যুদ্ধে জয়লাভ করে বাংলা তথা ভারতে ব্রিটিশ প্রভুত্বের যে সম্ভাবনা দেখা যায়, বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভ তাকে বাস্তবায়িত করে ।

ভারতীয় শাসকদের অযোগ্যতা :-
             পলাশির যুদ্ধে শুধুমাত্র বাঙালার নবাব পরাজিত হয়েছিলেন । কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে বাংলার নবাব, অযোধ্যার নবাব, মোগল সম্রাট একসঙ্গে পরাজিত হন ।

নবাবের ক্ষমতা হ্রাস :-
          বক্সারের যুদ্ধের ফলে অযোধ্যা ও বাংলার নবাবের ক্ষমতা কোম্পানি চূড়ান্তভাবে হ্রাস করে । অযোধ্যার নবাব কোম্পানির নিয়ন্ত্রাধীন হয়ে পড়েন ।

কোম্পানির দেওয়ানি লাভ :-
        বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর ইংরেজরা বার্ষিক ২৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে ।

শিল্প বাণিজ্যের ওপর কোম্পানির কর্তৃত্ব :-
                বক্সারের যুদ্ধের পর বাংলার কুটির শিল্প ও বাঙালির ব্যবসা-বাণিজ্যের ধ্বংসসাধন করে ব্রিটিশরা একচেটিয়া ভাবে শিল্প বাণিজ্যের উপর নিজের কৃর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ।

উপসংহার :-
        বক্সারের যুদ্ধ ছিল ভারতের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা । ঐতিহাসিঅ বিপিনচন্দ্রের মতে "বক্সারের যুদ্ধ ভারতের ইতিহাসে যুগান্তকারী ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা" । কিন্তু পলাশীর যুদ্ধ জয়ের পর ব্রিটিশ রাজত্মের যে ভিত্তি প্রস্তর গড়ে উঠেছিল, তা বক্সারের যুদ্ধে সুদৃঢ় হয়েছিল ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.