মার্কসবাদের মূল সূত্র গুলি বা বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো ।

📌 মার্কসবাদের মূল সূত্র গুলি বা বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো ।

👉🏼 রাষ্ট্র ও সমাজ সম্পর্কে কাল মার্কসের দার্শনিক চিন্তা ভাবনা কে বলা হয় মার্কসবাদের মূল সূত্র বা বৈশিষ্ট । মার্কসবাদ কতগুলি সূত্রের উপর গড়ে উঠেছে, সেগুলি নিচে বর্ণনা করা হলো ।


১. দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ :-
            মার্কসের দ্বন্দ্বমূলক কথা হল এই জগতের প্রতিটি বস্তুই পরস্পর পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল এবং সর্বদা পরিবর্তনশীল । দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ এর তিনটি মৌলিক নিয়ম, ১. বৈপরিত্যের দ্বন্দ, ২. বস্তুর পরিমাণগত পরিমানের সঙ্গে গুনগত পরিবর্তন, ৩. নীতির নৈতিকরন ।

২. ইতিহাসিক বস্তুবাদের ব্যাখ্যা :-
             ঐতিহাসিক বস্তুবাদ কেবলমাত্র সমাজ ও তার বিভিন্ন সংগঠনের বিকাশ ইতিহাসের ব্যাখ্যা করে না । এই তথ্য ভবিষ্যৎ সমাজব্যবস্থা সেই সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করে ।
      মার্কসের মতে, উৎপাদন শক্তি ও উৎপাদন সম্পর্কের মধ্যে সংগতি থাকলে উৎপাদন কার্য চলতে পারে ।

৩. উদবৃত্ত মূল্যের তত্ত্ব :-
       পুঁজিবাদী সমাজে পুঁজিবাদীরা যে পুঁজি তৈরি করে এবং শ্রমিকদের শোষণ করে তার ন্যূনতম বাক্য হলো উদবৃত্ত মূল্য । উৎপাদিত দ্রব্যের মূল্য থেকে যে বেশি পরিমাণ মূল্য দেওয়া হয় না তাই উদ্বৃত্ত মূল্য ।

৪. শ্রেণী সংগ্রাম তত্ত্ব :-
         শ্রেণী সংগ্রাম তত্ত্বের মূল কথা হলো; আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত সমাজ ও যত সংগ্রাম দেখা গেছে তার প্রত্যেকটি দুটি পরস্পর বিরোধী শ্রেণীর অস্তিত্ব দেখা যায় ।

৫. রাষ্ট্র সম্পর্কিত তত্ত্ব :-
           অ্যারিস্টটল বলেছেন রাষ্ট্র একটি সাশ্বত ও মঙ্গলকামী প্রতিষ্টা । কিন্ত মর্কস এই কথাটি বলেননি । আদিম সাম্যবাদী সমাজে মালিকানা ছিল না । পরে দাস প্রথা শুরূ হলে মালিকানা প্রথাও শুরু হয় । ফলে রাষ্ট্র শোষনের যন্ত্র হিসেবে গড়ে ওঠে ।

৬. শোষনের অবসান :-
      সমাজ থেকে শোষনের অবসান ঘটবে, তখন রাষ্ট্রের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে, রাষ্ট্রের অবলুপ্তি ঘটবে । গড়ে উঠবে শ্রেনীহীন, শোষনহীন, সাম্যবাদী সমাজ ব্যবস্থা । যার মূলনীতি হবে – প্রত্যেকে তাঁর সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করবে এবং প্রয়োজন মত ভোগ করবে ।

বিপ্লব সংক্রান্ত তথ্য :-
         বিপ্লব এর অর্থ হল পরিবর্তন । মার্কসের মতে বিপ্লব এমন একটি সামাজিক প্রক্রিয়া যার প্রভাবে পুরনো সমাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে তার ধ্বংসস্তূপের ওপর নতুন সমাজ গড়ে তোলা । মূলত, শ্রেণী বৈষম্য মূলক সমাজের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ফলে বিপ্লব দেখা দেয় ।

সমালোচনা :-
   মার্কস -এর নীতি ও তত্ব বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছে ।
    প্রথমত : মাক্স অর্থনীতি বিষয়ের উপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়েছে । অর্থনীতি ছাড়া মানুষের জীবনে প্রেম, প্রীতি, স্নেহ-মমতা বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে না ।
    দ্বিতীয়ত : মার্কস বলেছেন ইতিহাস ঘটনাকে প্রভাবিত করে । কিন্তু ক্ষমতার প্রতি লোভ, মহাপুরুষের আবির্ভাব, ধর্ম ও প্রভৃতির শক্তি ইতিহাস কে প্রভাবিত করে ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.