বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে যামিনী রায়ের অবদান আলোচনা করো


👉🏼 বাঁকুড়া জেলার "বেলিয়াতোড়" গ্রমের মানুষ যামিনী রায়ের বাল্য জীবন কেটেছিল গ্রাম্য মৃৎ শিল্পিদের সাথে । ১৯০৩ সালে তিনি কলকাতায় আর্ট কলেজে ভর্তি হন এবং বিলজি সাহেবের কাছে পাশ্চাত্য রীতি অঙ্কন পদ্ধতি শেখেন ।

    প্রথাগত ইউরোপীয় তেলরঙ ও জলরঙ শিক্ষায় তাঁর মন ভরেনি । এই অতৃপ্তি তাকে নিয়ে যায় বাংলার লোকো শিল্পের কাছে । বিশেষত তিনি আকৃষ্ট হন বাংলার "পট" -শিল্পের কাছে । এই বিশেষ পরীক্ষা - নিরিক্ষার উদ্দেশ্যে 'যামিনী রায়' মেদনিপুর, বেলতোড়, কালিঘাট অঞ্চল থেকে পট সংগ্রহ করেন । এবং দীর্ঘ অনুশীলন করে ক্রমে তিনি তাঁর নিজস্ব চিত্রভাষা তৈরি করেন । পটুয়া শিল্পিদের শৈলি ধারায় প্রভাবিত হয়ে জলরঙে নিজস্ব স্টাইলে ( যামিনী রায় স্টাইল ) ছবি আঁকেন ।

    'যামিনী রায়ের' ছবিতে চিত্রিত মানুষজন, পশু-পাখির অবস্থান, আলপনা রঙ, সমতল ব্যাকগ্রাউন্ডে দেখা যায় অলঙ্করন । তাঁর ছবির বীষয় ছিল — 'রামায়ন ও মহাভারতের নর-নারী', 'রাধাকৃষ্ণ', 'জিশুখ্রিস্ট', 'মি ও শিশু', 'আদিবাসি সমাজ', 'পশু-পাখি' ইত্যাদি । 'যামিনী রায়ের' রঙ - তুলির অপূর্ব দক্ষতার জীবন্ত রূপ প্রকাশ পেয়েছে – সাঁওতাল যুবক - যুবতির চিত্র, গ্রামের চাষি, কামার - কুমোর, প্রভৃতির চিত্র ।

   ভারতীয় চিত্রকলায় যামিনী রায়ের ছবির ভাব - বিষয়, অঙ্কন রীতি সমকালীন শীল্পিদের থেকে এতটাই আলাদা ছিল যে, তিনি এক স্বতন্ত্র চিত্ররীতি নির্মান করে প্রতিষ্ঠিত হন । তাঁর বিখ্যাত চিত্রকর্ম গুলি হল — "সাঁওতাল মা ও দুই ছেলে, কোনে ও তার দুই সঙ্গী, ক্রন্দসী মাছের সঙ্গে দুই বিড়াল, প্রভৃতি । চিত্রকলায় বিশিষ্ট কৃতির জন্য তিনি ১৯৫৫ সালে 'পদ্মভূষণ' সম্মানে ভূষিত হন এবং ওই বছরই ললিত কলা একাডেমীতে "ফেলো" নির্বাচিত হন ।

Label Name

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.