Distinction between Written and Unwritten Constitutional :
ভূমিকা :-
লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করলে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা সহজ হয় । লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা অবৈজ্ঞানিক এবং অযৌক্তিক বলে অনেকে মনে করেন । তবে অধ্যাপক গেটেলের মতে, লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য মাত্রাগত, মূলগত নয় ( one of degree rather than of kind ) ।
লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে উৎপত্তিগত পার্থক্য লক্ষ করা যায় । তা, নীচে কয়েকটি পয়েন্টের মাধ্যমে বর্ণিত করা হল ——
উদ্ভবগত পার্থক্য :
লিখিত সংবিধান একটি সংবিধান পরিষদ বা কনভেনশন কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয় ।
কিন্তু অলিখিত সংবিধান এইভাবে ঘোষিত হয় না । এরূপ সংবিধান প্রথা, আচার - ব্যবহার, রীতিনীতি, বিচারালয়ের নাম প্রভৃতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে ।
সংবিধান সংশোধন পদ্ধতির ক্ষেত্রে পার্থক্য :
যে সংবিধান লিখিত হয়, তাকে সাধারণত প্রকৃতিগতভাবে দুষ্পরিবর্তনীয় হতে দেখা যায় । এরুপ সংবিধান সংশোধনের জন্য বিশেষ পদ্ধতির প্রয়োজন । উদাহরণ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে ।
কিন্তু, ব্রিটেনের মতো অলিখিত সংবিধানের বিধানগুলি সুপরিবর্তনীয় ( flexible ) হওয়ায় সাধারণ আইন প্রণয়নের পদ্ধতি অনুসারে আইনসভা সেগুলিকে অতি সহজেই সংশোধন বা পরিবর্তন করতে সক্ষম ।
সাংবিধানিক আইন এবং সাধারণ আইনের মধ্যে পার্থক্য :
লিখিত সংবিধান যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আইন সেহেতু সরকার সব সময় সংবিধান অনুসারে কাজ করতে বাধ্য থাকে ।
কিন্তু, অলিখিত সংবিধানে যেহেতু আইনসভা রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী সেহেতু সরকার যে - কোনো আইন, যে - কোনো সময় প্রণয়ন করতে পারে ।
বিচার বিভাগের প্রামাণ্যর ক্ষেত্রে পার্থক্য :
লিখিত সংবিধানে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কার্যাবলি নির্দিষ্ট করা থাকে । ফলে এক বিভাগ অন্য বিভাগের কাজ করতে পারে না ।
কিন্তু, অলিখিত সংবিধানে বিচার বিভাগের হাতে কার্যত এরূপ কোনো ক্ষমতা অর্পণ করা হয় না । আইন বিভাগ যেসব আইন প্রণয়ন করে সেগুলিকে বাতিল করার কোনো ক্ষমতা বিচার বিভাগের থাকে না ।
মৌলিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পার্থক্য :
যেসব দেশের সংবিধান লিখিত হয়, সেইসব দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলি সংবিধানে লিপিবন্ধ থাকে । ফলে জনসাধারণ তাদের অধিকার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারে । শাসন বিভাগ কিংবা আইন বিভাগ ওইসব মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ অথবা সেগুলিকে অপহরণ করার চেষ্টা করলে জনসাধারণ সেগুলিকে রক্ষা করার জন্য সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে পারে ।
কিন্তু, সংবিধান অলিখিত হলে কোন্ কোন্ অধিকার নাগরিকদের মৌলিক অধিকার , সে সম্পর্কে তাদের কোনো সুস্পষ্ট ধারণা থাকে না ফলে শাসন বিভাগ বা আইন বিভাগ ওইসব অধিকারে হস্তক্ষেপ করলেও জনসাধারণ তার প্রতিবাদ করতে পারে না ।