কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ || বসুবিজ্ঞান মন্দির Class 10

কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ :-  
              আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ও আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার সময়ে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাতেই গবেষণার কাজ শুরু করেন ও মাঝে মাঝেই তাঁদের বিভিন্ন সরকারি প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হত । ফলে একটি স্বশাসিত বিজ্ঞান বিভাগের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধ হয়, যেখানে গবেষকরা স্বাধীনভাবে গবেষণা করার সুযোগ লাভ করতে পারবেন ।


        এই উদ্দেশ্যকে রূপদান করেন স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় । তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষের কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন ।

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এবং রাসবিহারী ঘোষ, স্যার তারকনাথ পালিত প্রমুখের সহযোগিতায় ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান কলেজ স্থাপিত হয় । আধুনিক ভারতের বিজ্ঞান অনুশীলনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান কলেজ প্রধানতম প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় । আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ও স্যার সি.ভি. রমন যথাক্রমে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় পালিত অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন । ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে এই প্রতিষ্ঠানে গবেষণার কাজে নিযুক্ত হন মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ, জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখার্জি প্রমুখ বৈজ্ঞানিকরা ।
      তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে বিশ শতকের বৌদ্ধিক জগতের ধ্রুবতারা ।





বসুবিজ্ঞান মন্দির :-  
          আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু নিজের উদ্যোগে একটি স্বাধীন বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন । ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অবসর গ্রহণ করে তিনি সেই স্বাধীন প্রতিষ্ঠান গড়ার কাজে মনোনিবেশ করেন । ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে জগদীশচন্দ্রের আন্তরিক প্রচেষ্টা সফল হয় ।
আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু

        তিনি এই বছর ৩০ নভেম্বর বসুবিজ্ঞান মন্দির - এর সূচনা করেন । তাঁর ভাষায়, “এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু বীক্ষণাগার নহে, এটি একটি মন্দিরও" । ভগিনী নিবেদিতা জগদীশচন্দ্রকে এই প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য উৎসাহিত করেন ।

      নিবেদিতার স্মৃতিকে স্মরণ করে বিজ্ঞান মন্দিরের প্রবেশপথে জ্ঞানের আলোকবর্তিকাধারী নারীমূর্তি বসানো হয় । বসুবিজ্ঞান মন্দিরের সূচনায় পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও উদ্ভিদবিদ্যা — এই তিনটি বিষয়ে গবেষণার কাজ শুরু হয় । পরবর্তীকালে বিজ্ঞানের আরও অনেক বিভাগ সংযোজিত হয় ।

      আমৃত্যু জগদীশচন্দ্র এই প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা ছিলেন । বসুবিজ্ঞান মন্দির বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে ।


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.