জন ক্যালভিন এর মতবাদ সম্পর্কে আলোচনা করো

জন ক্যালভিন :-  জন ক্যালভিন ( ১৫০৯-১৫৬৪ খ্রি . ) ছিলেন ক্যাথোলিক চার্চ ও পোপতন্ত্র বিরোধী অপর গুরুত্বপূর্ণ ধর্মসংস্কারক এবং প্রোটেস্টান্ট মতবাদের অন্যতম প্রচারক । তিনি ১৫০৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের নয়ন্ ( Noyon ) শহরে জন্মগ্রহণ করেন । কিন্তু সুইজারল্যান্ডের প্রোটেস্টান্ট মতবাদের অন্যতম শহর জেনেভা ছিল তাঁর কর্ম পরিচালনার প্রধান কেন্দ্র ৷

জন ক্যালভিন

A. মতবাদ :-

 1. পবিত্রতা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ :-  কঠোর যুক্তিবাদী , সরল ও অনাড়ম্বর জীবনাদর্শে বিশ্বাসী জন ক্যালভিন চার্চ ও যাজকতন্ত্রের অনাচারের বিরোধিতা করে খ্রিস্টানধর্মকে পুরোনো পবিত্রতার যুগে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রয়াস চালান । তিনি বিশ্বাস করতেন যে , মানুষের ব্যক্তিজীবন পবিত্র না হলে সমাজজীবন পবিত্র হবে না । এজন্য তিনি তাঁর অনুগামীদের নিঃস্বার্থভাবে সৎ ও পবিত্র জীবনযাপনের পরামর্শ দেন ।

 2. প্রচার পুস্তিকা :-  নিজের মতবাদ জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ক্যালভিন ইন্সটিটিউট অব খ্রিস্টান রিলিজিয়ন ' নামে একটি পুস্তক প্রকাশ করেন । তিনি প্রচার করেন যে , ঈশ্বর মানুষের সবকিছুই জানেন এবং মানুষের সবকিছুই তিনি পূর্ব থেকে নির্ধারণ করে দেন । পোপ বা যাজক তা পরিবর্তন করতে পারেন না ।

 3. বাইবেলের গুরুত্ব প্রচার :-  তিনি বলেন যে , বাইবেল হল সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন । রাষ্ট্র হল বাইবেলের আইনের অধীন ।

Sounce HDMI Switch 2 in 1 Out 4K 60hz ....HD 

         Video, PC Gaming Accessories

 

B. কর্মোদ্যোপ :-  জন ক্যালভিন ও তার সহযোগীরা অর্ডিন্যান্সেস ' ‘ একলেসিয়াসটিক ( Ordinances Ecclesiastiques ) নামে এক সংবিধান রচনা করে সাধারণ মানুষ যাজক ও রাষ্ট্রের আচরণ ও কর্তব্য সুনির্দিষ্ট করে দেন । এই সংবিধান অনুসারে -

১. জেনেভা অঞ্চলে কেউ ধর্মপ্রচার করতে গেলে তার জন্য সেখানকার চার্চের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয় ।

 ২. বাইবেলকে একমাত্র স্বীকৃত গ্রন্থ বলে ঘোষণা করা হয় । রাষ্ট্রকেও বাইবেলের আইন অনুসারে চলার কথা বলা হয় । 

 ৩. যাজকদের কঠোর পরিশ্রম , বিদ্যাচর্চা ও প্রচারের কাজে অংশ নিয়ে সমাজ গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয় ।

 ৪. জেনেভার জনজীবন নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে তিনি সেখানকার নির্বাচিত ৫ জন যাজক ও ১২ জন অযাজক প্রতিনিধি নিয়ে একটি প্রেসবাইটারি ' গঠন করেন ।

 মূল্যায়ন :-

OPPO A31 (Mystery Black, 6GB 

RAM, 128GB Storage...


  1. মতবাদের জনপ্রিয়তা ক্যালভিনের নৈতিক আচরণ ও গণতান্ত্রিক আদর্শের শিক্ষা তাঁর মতবাদকে সকলের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে । সুইজারল্যান্ডের বাইরে ইংল্যান্ড , স্কটল্যান্ড , হল্যান্ড , ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশেও ক্যালভিনবাদ জনপ্রিয়তা লাভ করে । তাঁর মতবাদ হল্যান্ডের প্রজাতান্ত্রিক বিদ্রোহকে উৎসাহিত করে ।

  2. বিভিন্ন ক্যালভিন গোষ্ঠী :-  ক্যালভিনবাদের সমর্থকরা ফ্রান্সে ' হিউগনো ' , ইংল্যান্ডে ' পিউরিটান ' ( উগ্র প্রোটেস্টান্ট ) এবং স্কটল্যান্ডে প্রেসবিটারিয়ান ' নামে পরিচিত হয় । ইতিহাসবিদ ফিশারের মতে , “ প্রোটেস্টান্ট ধর্মসম্প্রদায়গুলির মধ্যে ক্যালভিনবাদের বিস্তার এবং প্রভাব ছিল সর্বাধিক ও গভীর । ”


 ☀ ইংল্যন্ডের ধর্মসংস্কার আন্দোলনে অষ্টম হেনরির ভূমিকা লেখ বা আলোচনা করো ।

 👉  অষ্টম হেনরি :-

        ষোড়শ শতকের পূর্বে ইংল্যান্ডে জন ওয়াইক্লিফ ক্যাথোলিক চার্চ ও পোপতন্ত্রের অন্যায় ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ করে জনমত গঠন করেছিলেন । এরপর ষোড়শ শতকে ইংল্যান্ডে ধর্মসংস্কার আন্দোলনে সেদেশের টিউডর বংশের রাজা অষ্টম হেনরি ( ১৫০৯-১৫৪৭ খ্রি . ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । কিন্তু ষোড়শ শতকে ইংল্যান্ডে ক্যাথোলিক চার্চ ও পোপতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে ধর্মসংস্কার আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল তা উৎসগত দিক থেকে ইউরোপীয় ধর্মসংস্কার আন্দোলন থেকে কিছুটা পৃথক ছিল । কারণ , রাজা অষ্টম হেনরি মনেপ্রাণে ক্যাথোলিক মতবাদের সমর্থক হলেও বাস্তব পরিস্থিতির কারণে তিনি প্রকাশ্যে ক্যাথোলিক বিরোধী ধর্মসংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ।

 A. হেনরির বিবাহবিচ্ছেদের প্রয়াস :-  ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরি রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনের তাগিদে সেদেশে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান ।

 ১. ক্যাথারিনকে বিবাহ :-  রাজা হেনরি প্রথমে তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার বিধবা পত্নী ক্যাথারিনকে বিবাহ করেন ।

 ২. অ্যানাবোলিনকে বিবাহের উদ্যোগ :-  পরবর্তীকালে অপুত্রক অষ্টম হেনরি পুত্রসন্তান লাভের আশায় স্ত্রী ক্যাথারিনের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করে অ্যানাবোলিন নামে জনৈক মহিলাকে বিবাহ করার পরিকল্পনা করেন ।

 ৩. পোপের অনুমতিদানে টালবাহানা :-  রাজার এই বিবাহবিচ্ছেদে পোপের অনুমোদন বাধ্যতামূলক ছিল । ক্যাথারিন ছিলেন স্পেনের রাজকন্যা । স্পেনের রাজা ছিলেন গোঁড়া ক্যাথোলিক এবং পোপের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল । এজন্য অষ্টম হেনরির বিবাহবিচ্ছেদে অনুমোদন দিতে পোপ টালবাহানা করতে থাকেন ।

 B. রোমান চার্চের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ :-  এই পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ডের অষ্টম হেনরি , তাঁর মন্ত্রী টমাস ক্রমওয়েল ও ব্রিটিশ পার্লামেন্ট একযোগে ধর্মসংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করে ।

Photron 10 inch Professional USB
Powered LED Ring Light with
Buy Now

 ১. আইন পাস :-  মন্ত্রী ক্রমওয়েলের পরামর্শে অষ্টম হেনরি ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকেন । সেখানে ধর্মসংস্কারের প্রসঙ্গ তুলে রাজা কয়েকটি আইন পাস করে রোমান চার্চ তথা পোপের সঙ্গে ইংল্যান্ডের অর্থাৎ অ্যাংলিকান চার্চের সম্পর্ক ছিন্ন করেন ।

 ২. বিবাহবিচ্ছেদে মান্যতাদান :-  অ্যাংলিকান চার্চের অনুমোদন পেয়ে অষ্টম হেনরি ক্যাথারিনের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ সম্পূর্ণ করেন । 3 রাজাই ইংল্যান্ডের চার্চের প্রধান ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৫৩৪ খ্রিস্টাব্দে ' অ্যাক্ট অফ সুপ্রিমেসি ' ( Act of Supremacy ) নামে আইনের দ্বারা রাজাকে ইংল্যান্ডের চার্চের প্রধান বলে ঘোষণা করে । ' অ্যাক্ট অফ অ্যাপিল ' নামক আইনের দ্বারা পোপের কাছে বিচার প্রার্থনা নিষিদ্ধ হয় । আইনের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের ক্যাথোলিক মঠ ও সংঘ , ইংল্যান্ড থেকে রোমে ধর্মর্কর প্রেরণ প্রভৃতি নিষিদ্ধ হয় । রাজা চার্চ ও মঠের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এবং তা বিক্রি করে রাজকোশের অর্থাভাব দূর করেন ।

 মূল্যায়ন :- অষ্টম হেনরির পরবর্তীকালে তাঁর পুত্র ষষ্ঠ এডওয়ার্ড ( ১৫৪৭-৫৩ খ্রি . ) ইংল্যান্ডে প্রোটেস্টান্ট মতবাদ বহাল রাখেন । তবে অষ্টম হেনরির কন্যা রানি মেরী ( ১৫৫৩-৫৮ খ্রি . ) ইংল্যান্ডে ক্যাথোলিক ধর্ম পুনরায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন । কিন্তু তিনি এ কাজে সফল হননি । 

pTron Bassbuds Duo New Bluetooth
5.1 Wireless Headphones, Stereo

 

     এরপর অষ্টম হেনরির অপর কন্যা প্রথম এলিজাবেথের রাজত্বকালে ( ১৫৫৮-১৬০৩ খ্রি . ) ইংল্যান্ডের ধর্মসংস্কার আন্দোলন সুপ্রতিষ্ঠিত হয় । তিনি ইংরেজি ভাষায় অনূদিত বাইবেলকে এবং পার্লামেন্টের সহায়তায় অ্যাংলিকান চার্চকে জাতীয় স্বীকৃতি দেন ।



Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.