২১. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে কোন্ কোন্ লেখক ও কবির নাম এসেছে প্রসঙ্গসহ আলোচনা করো ।
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ
কলমের ঐতিহাসিক বিবর্তন বর্ণনাকালে কলমের সঙ্গে নানাভাবে জড়িয়ে থাকা বিখ্যাত
ব্যক্তিদের প্রসঙ্গও আলোচনা করেছেন ।
প্রথমেই এসেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা । কারণ, ফাউন্টেন
পেনের ঝরনা কলম নামটি সম্ভবত তাঁরই দেওয়া । এরপর লেখক ফাউন্টেন পেন জমানোর
গল্প বলতে গিয়ে ঔপন্যাসিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করেছেন
। শৈলজানন্দের ফাউন্টেন পেনের সংগ্রহ ছিল ঈর্ষণীয় । প্রায় ডজন দুয়েক
মহার্ঘ কলমের মধ্যে তাঁর কাছে পার্কার কলমই ছিল বেশ কয়েক রকম ।
শৈলজানন্দই প্রাবন্ধিককে বলেছিলেন এই কলম জমানোর নেশা তিনি পেয়েছেন
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে । আসলে
কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রেরও দামি ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা ছিল ।
শ্রীপান্থ সোনার দোয়াত - কলম যে সত্যিই হয়; তা চাক্ষুষ করেছিলেন
চিত্রশিল্পী ও সংগ্রাহক সুভো ঠাকুরের কাছে ।
এভাবেই কলমের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনাকালে আধুনিক যন্ত্রযুগ এবং
টাইপরাইটার ও কম্পিউটার -এর ক্রমবর্ধমান প্রসার প্রসঙ্গে তিনি
ব্রোঞ্জের অন্নদাশঙ্কর রায় আর সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কথা বলেন ।
সেইসঙ্গে মনে করিয়ে দেন লিপিশিল্পী হিসেবে সত্যজিৎ রায়ের পারদর্শিতার
কথা । তিনিই শেষপর্যন্ত নিবের কলমের মানমর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন । এ ছাড়া
বিশ্ববন্দিত চিত্রশিল্পী রবীন্দ্রনাথের সূচনা যে -কলম নিয়ে পাণ্ডুলিপির খাতায়
অক্ষর কাটাকুটি করতে গিয়ে, তাও আমাদের জানাতে ভোলেন না ।
রচনাটির শেষে শ্রীপান্থ জানান যে, কলমকে কেবল একবার খুনির
ভূমিকায় দেখা গেছে । স্বনামধন্য লেখক ত্রৈলোক্যনাথ
মুখোপাধ্যায়ের অসাবধানতাবশত নিজের হাতের কলম বুকে ফুটে গিয়ে মৃত্যু
হয়েছিল ।