গুপ্ত গহ্বর থেকে পশুদের বেরিয়ে আসা কোন ঐতিহাসিক ঘটনার ইঙ্গিত বহন করে ?

৯. ‘প্রদোষকাল ঝঞ্ঝাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস, / যখন গুপ্ত গহ্বর বেরিয়ে এল'— প্রদোষকাল ঝঞ্ঝাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস বোঝানো হয়েছে ? ‘গুপ্ত গহ্বর’ থেকে পশুদের বেরিয়ে আসা কোন ঐতিহাসিক ঘটনার ইঙ্গিত বহন করে ?

উত্তরঃ  ‘আফ্রিকা’ কবিতার মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদী শাসনের প্রত্যক্ষদর্শী রবীন্দ্রনাথ ঔপনিবেশিকতা ও সাম্রাজ্যবাদকে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছেন । সাম্রাজ্যবাদ দীর্ঘস্থায়ী হলেও তা যে চিরস্থায়ী নয় সে - কথা বোঝাতেই কবি যেন আফ্রিকা কবিতা লিখেছেন । আফ্রিকার জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে সাম্রাজ্যবাদী হামলায় মানবতার অবক্ষয় এবং শেষে ঔপনিবেশিকতার যবনিকা তথা আসন্ন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘোষণা এই কবিতায় ব্যক্ত হয়েছে । ‘প্রদোষকাল’ শব্দটির অর্থ সন্ধ্যা অর্থাৎ দিনের শেষ সময় ‘ঝঞ্ঝাবাতাস’ ও ‘রুদ্ধশ্বাস’ শব্দ দুটি সমকালীন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার সূচক । তাই উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটির সাহায্যে কবি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখিয়েছেন, যে - সাম্রাজ্যবাদী শাসন এতদিন অসহায় আফ্রিকার ওপর অত্যাচার চালিয়ে এসেছে এবার তার শেষ সময় । এবার পশ্চিমি সভ্যতা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটের মুখে, বিপন্ন হতে চলেছে তার অস্তিত্ব ।

      ‘গুপ্ত গহ্বর থেকে পশুদের বেরিয়ে আসা’ বলতে কবি আড়াল থেকে শোষণ, অত্যাচার চালানো পাশবিক শক্তির সামনাসামনি আসাকে বোঝাতে চেয়েছেন । সাম্রাজ্যবাদী শাসকরা একসময় অসহায় আফ্রিকার ওপর চালিয়েছে অকথ্য অত্যাচার । হত্যা করেছে মানবিকতাকে ।

      প্রথম যুদ্ধোত্তর কালে এই অসুখে মানুষ বেসামাল হয়ে পড়ে, তখন থেকেই অনিবার্যভাবে প্রকট হয়ে উঠেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা । গুপ্ত গহ্বর থেকে হিংস্র পশুর বেরিয়ে আসা আসলে সভ্যসমাজের বর্বর রূপের বহিঃপ্রকাশেরই ইঙ্গিতবাহী ।














Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.