আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ – কবিতাটির নামকরনের সার্থকতা আলোচনা করো ।

৬. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ – কবিতাটির নামকরনের সার্থকতা আলোচনা করো ।


উত্তরঃ  সাহিত্যে নামকরণ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । নামকরণের মাধ্যমে সাহিত্যিক যেমন তাঁর সৃষ্টিকে পূর্ণতা দেন, তেমনি পাঠককে সাহিত্যকর্মের রসগ্রহণে সহায়তা করার চেষ্টাও করেন । নামকরণের বিভিন্ন আঙ্গিক থাকে । যেমন– চরিত্রকেন্দ্রিক, ঘটনাকেন্দ্রিক, ভাব - ব্যঞ্ছনার্থক ইত্যাদি । স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতায় সমকালীন সমাজ সর্বদা প্রতিফলিত হয় । তিনি বিপন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও খুঁজে পান আশার উজ্জীবনী মন্ত্র ।

    কবিতাটিতেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি । বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ - দাঙ্গা, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে মানুষ নিঃসঙ্গ, কোণঠাসা এবং বিধ্বস্ত । কবি যেন বর্তমান সময়ের অন্ধকার কানাগলি থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে ব্যস্ত । আজকে মানুষের চলার পথের দু - দিকে ধস ও গিরিখাতের মতো বিপদ আর প্রতিকূলতা । তার মাথার উপরে ছাদ নেই, প্রতি মুহূর্তে হানাদারি শত্রুর ভয়ে সে ভীত ।

     কাছে - দূরে অর্থাৎ, হিংসাশ্রয়ী এ পৃথিবীর যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা শিশুদের শব সাধারণ মানুষকে আজ অনুতপ্ত ও বিধ্বস্ত করে তোলে । ইতিহাসে ঠাঁই না - পাওয়া এইসব মানুষের কাছে সমগ্র পৃথিবীটাই এখন জীবস্মৃত, বাঁচা - মরার ভেদরেখা ভুলে তারা দিশাহীনতায় হয়েছে পরমুখাপেক্ষী । কিন্তু কবি চান ইতিহাসে উপেক্ষিত এই মানুষগুলি নৈরাশ্য - ক্লান্তি ভুলে একবার সংঘবদ্ধ হোক । তিনি তাদের নিয়েই আরও একবার বেঁধে থাকার স্বপ্ন দেখেন । কারণ বিবেকবান শান্তিকামী, ঐক্যবদ্ধ শক্তিই সাম্রাজ্যবাদীকে প্রতিহত করতে পারে । তাই ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ নামকরণটি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মনুষ্যত্বের অঙ্গীকারকেই উজ্জ্বল আর সার্থক করে তোলে ।















Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.