অথবা,
‘এমনই ইতিহাস’ বলার কারণ কী ?

অথবা,
‘আমাদের ডানপাশে ধ্বস
আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ’
— সমগ্র কবিতার পরিপ্রেক্ষিতে এই মন্তব্যের তাৎপর্য লেখো ।
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি কবি
শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতার অংশবিশেষ
। সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে আজকের পৃথিবী বিষাক্ত
হয়ে উঠেছে । মানুষের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন । এই সময়ে আমরা, বিশেষ করে সাধারণ
মানুষ এক ভয়ংকর দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি । আমরা ডাইনে - বাঁয়ে বিপদকে রেখে,
মাথার ওপর হানাদারি শত্রুকে উপেক্ষা করে সামনের প্রতিকূল পথ
ধরে এগিয়ে চলেছি । এ
ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই । ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে আমরা ব্যর্থ ।
প্রতিক্ষণে হানাদারি মৃত্যুর ভয়ে আমরা ভীত ।
সাম্রাজ্যবাদী ও সুবিধাবাদী শক্তির কাছে আজ আমরা পর্যুদস্ত ।
কিন্তু আমাদের এই দুঃখের ইতিহাস অলিখিতই রয়ে যাবে চিরকাল । বেদনার মতো
কালোরাত্রির খামে চিরকাল তা আবন্ধ থেকে যাবে, এটাই কবির তাই না আক্ষেপ ।
বিশ্বাসের ভিত যেখানে আলগা হয়ে যায়, সেখানেই সংশয়ের সৃষ্টি হয়
। কবি মনে করেন সারাপৃথিবীর ইতিহাসে সাধারণ মানুষের কথা সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি
। কারণ, ইতিহাসকে নিয়ন্ত্রণ করে শাসক ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি । ক্ষমতাবান শাসকের
দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ইতিহাসে মানুষের অবস্থার যথার্থ প্রতিফলন ঘটে না । তাদের
অসহায় বিপন্নতা কিংবা জীবস্মৃত পরিস্থিতির খোঁজ, শাসকের ইতিহাসে অনুপস্থিত বলেই
তথাকথিত বিকৃত ইতিহাস সম্পর্কে কবির এই সংশয় ।