তপন আর পড়তে পারে না । বোবার মতো বসে থাকে ।’ — তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করো ।

জ্ঞানচক্ষু

১৬. ‘তপন আর পড়তে পারে না । বোবার মতো বসে থাকে ।’ — তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করো ।


উত্তরঃ– আশাপূর্ণা দেবীর 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের ইচ্ছে ছিল লেখক হওয়ার । একই সঙ্গে লেখকদের সম্বন্ধে তার ধারণা ছিল তাঁরা বুঝি আকাশ থেকে পড়া অতিলৌকিক কোনো প্রতিভা । কিন্তু তার ছোটোমাসির বিয়ের পর নতুন মেসোকে দেখে তার সেই ভুল ভাঙে । তার নতুন মেসো অধ্যাপক, বই লেখেন । সেসব বই ছাপাও হয় – অথচ মেসোর আচার - আচরণের সঙ্গে তার বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকুর আচার - অচারণের কোনো তফাতই সে খুঁজে পায় না । নতুন মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন একটি আস্ত গল্প লেখে, যেটি তার মাসির হাত ঘুরে মেসোর হাতে গিয়ে পড়ে ।

     মাসির পীড়াপীড়িতে সামান্য কারেকশন । করে সেই গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপানোর আশ্বাস দেন নতুন মেসো । বাড়িতেও সে নিয়ে আনন্দের শেষ নেই । অনেকদিনের ইচ্ছে হয়তো এবার পুরণ হতে চলেছে — এই ভেবেই একটু সংশয়কে সঙ্গী করেই তপনের মনও উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে । কিন্তু যথাসময়ে ‘সন্ধ্যাতারা’ - য় ছাপা লেখাটি পড়তে গিয়ে তপন টের পায় কারেকশনের নামে লেখক, ছোটো মেসো গল্পের আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন ।

      নির্বিচারে কলম চালানোয় নিজের নামে ছাপানো গল্পে সে আর নিজেকেই খুঁজে পায় না । তপনের লেখকমন আহত হয় । নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার দুঃখযন্ত্রণা তাকে কুরে কুরে খায় । লজ্জা, অনুশোচনা আর আত্মসম্মানহীনতায় তার বাক্‌রোধ হয়ে আসে ।











পূর্ববর্তী প্রশ্ন


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.