১. " আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়" – অপেক্ষমান এই নারীর মধ্যে দিয়ে
কবি মানবীয় ভালোবাসার যে অনির্বান রূপটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন, তা পাঠ্য কবিতা
অবলম্বনে আলোচনা করো ।
.jpeg)
অথবা,
যুদ্ধের নেতিবাচক ভাবের পাশাপাশি যে মানবিক আবেদন ‘অসুখী একজন’ কবিতায়
প্রকাশিত হয়েছে তা আলোচনা করো ।
উত্তরঃ পাবলো নেরুদা তাঁর ‘অসুখী একজন' কবিতার অপেক্ষমান নারীর মধ্যে
ভালোবাসার অনির্বাণ রূপটি ফুটিয়ে তুলেছেন । কথক তার প্রিয় নারীকে রেখে চলে
যান বহুদুরে ।
সে জানত না যে, তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । সময়
চলমান, জীবনও তার সঙ্গে চলমান । সপ্তাহ - বছর কেটে যায় । কথকের পদচিহ্ন
ধুয়ে গিয়ে তার ওপর ঘাস জন্মায় । তবুও সে নারীর অপেক্ষা থামে না এইভাবে
অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে মুহূর্তগুলো একটার পর একটা পাথরের মতো ভারী হয়ে
নেমে আসে মেয়েটির মাথার ওপর ।
যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়ল সে-শহরে । সে-আগুনের করাল গ্রাসের
হাত থেকে বাদ গেল না শিশু কিংবা দেবতারাও । শান্ত হলুদ দেবতারা তাদের মন্দির
থেকে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে । কবির স্বপ্নের বাড়ি-ঘর সব চূর্ণ হয়ে
যায় পুড়ে যায় আগুনে ।
যেখানে শহর ছিল সেখানে চারদিকে ছড়িয়ে রইল কাঠ-কয়লা,
দোমড়ানো লোহা, পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ । কিন্তু
এতসবের মধ্যেও কবির প্রিয়তমা বেঁচে রইল কারণ প্রেম শাশ্বত, তার মৃত্যু নেই ।
এই প্রেম মানুষকে মরতে মরতে বাঁচতে শেখায় । এই ধ্বংসের মধ্যেও বেঁচে থাকে
মেয়েটির অনির্বাণ ভালোবাসা, বেঁচে থাকে ভালোবাসার মানুষের জন্য তার
প্রতীক্ষা ।