ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে শিল্পায়নের সূচনা হলে -শ্রমিক শ্রেণির
উদ্ভব ঘটে । বিংশ শতকের প্রথম দিকে শ্রমিক শ্রেণি মালিক শ্রেণির শোষণ ও
অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গড়ে তোলে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ।
এই মামলার প্রেক্ষাপট :-
(১) বিভিন্ন শ্রমিক আন্দোলন :-
শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি প্রদান, কাজের সময় হ্রাস, বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি
প্রথার বিলোপ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বাক্স্বাধীনতা, ট্রেড ইউনিয়-নের
স্বাধীনতা প্রভৃতির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয় ।
(২) হুইটলি কমিশনের নিয়োগ :-
ক্রমাগত শ্রমিক
অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রশমনের উদ্দেশ্যে সরকার ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে
‘হুইটলি কমিশন’ ( Whitley Commission ) নিয়োগ করে ।
এই আন্দোলনের ফলাফল :-
এই মামলার পরিণতি
কমিউনিস্টদের পক্ষে মোটেই ভালো হয়নি ।
(১) ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার রায়ে
কমিউ-নিস্ট পার্টির যাবতীয় প্রচার কার্য নিষিদ্ধ করা হয় ।
(২) বিভিন্ন কমিউনিস্ট নেতাদের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড
ঘোষণা করা হয় ।
(৩) ভারতের কমিউনিস্ট আদর্শের প্রসার, শ্রমিক ইউনিয়নের
সক্রিয়তার পাশাপাশি আরও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেন ।
গুরুত্ব :-
ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির উত্থানের ইতিহাসে এই মিরাট
ষড়যন্ত্র মামলার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম ।
(১) কংগ্রেস নেতা গান্ধিজি মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত
কমিউনিস্ট নেতাদের পক্ষে সমর্থন করেন ।
(২) জেলে বন্দি বামপন্থী নেতাদের আদর্শ ও বক্তব্য
সংবাদপত্রের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে পৌঁছোলে ভারতে সমাজতন্ত্রের আদর্শ দ্রুত
প্রসার লাভ করে ।
উপসংহার :-
কমিউনিস্ট পার্টি ও তার শাখার সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে
দিলেও কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে কমিউনিস্ট দলের প্রভাব অক্ষুণ্ণ ছিল । ফলে
স্বাধীনতা আন্দোলনে কমিউনিস্ট আন্দোলনের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ।