ভারতবাসী নেতাজির হাত ধরে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল । নেতাজির সারা জীবনের আত্মত্যাগ ঋষিতুল্য । যে কারণে ড . রমেশ চন্দ্র মজুমদার বলেছেন ব্যর্থতা থাকা সত্ত্বেও ভারতের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে আজান বাহিনীর অমিত বিক্রম ও শৌর্য ছিল অতুলনীয় –
( ১ ) বহু বাধা - বিঘ্ন সত্ত্বেও তারা উত্তর - পূর্ব সীমান্তের ১৫০ বর্গমাইল এলাকাকে স্বাধীন করতে সক্ষম হয়েছিল ।
( ২ ) আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনারা যুদ্ধে যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিল তাতে ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করেছিল যে ভারতে তাদের দিন ফুরিয়ে এসেছে ।
( ৩ ) আজাদ হিন্দ বাহিনীর প্রবল বীরত্ব ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত দেশবাসীর মনে প্রবল জাতীয়তাবাদী আশা - আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তোলে ।
( ৪ ) আজাদ হিন্দ বাহিনীর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে পরবর্তীকালে ভারতে নৌ - বিদ্রোহ ঘটে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীতে প্রবল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ।
উপসংহার :– সর্বোপরি নেতাজির " দিল্লি চলো " ও " তোমরা আমাকে রক্ত দাও । আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব ” আহ্বানগুলি ভারত জুড়ে যুব সমাজে নব উদ্দীপনার স্যষ্টি করেছিল ।
2. রাওলাট আইনের শর্তাবলি আলোচনা করো ।
👉 ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী জাতীয়তাবাদ , গণ আন্দোলন , বিপ্লবী কার্যকলাপ প্রভৃতি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই কুখ্যাত রাওলাট আইনটি প্রণয়ন করা হয় । এই আইনে যে সমস্ত ধারা রাখা হয় তা হল—
( ১ ) সরকার বিরোধী যে - কোনো প্রচারকার্য দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য করা হবে ।
( ২ ) সন্দেহভাজন যে - কোনো ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা যাবে ।
( ৩ ) গ্রেপ্তারের পর বিনা বিচারে তাদের অনির্দিষ্টকাল আটকে রাখা বা নির্বাসন দেওয়া যাবে ।
( ৪ ) বিনা পরোয়ানায় যে - কোনো ব্যক্তির বাড়ি সরকার তল্লাশি করতে পারবে ।
( ৫ ) বিশেষ আদালতে সন্দেহভাজন অপরাধীর বিচার হবে বিচারকগণ কোনো জুরির সহায়তা এবং কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়াই বিচার করতে পারবে ।
( ৬ ) রাওলাট আইনের দ্বারা সম্পন্ন হওয়া বিচারের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো উচ্চতর আদালতে আপিল করা যাবে না ।
( ৭ ) রাওলাট আইনে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে মুক্তির জন্য অর্থ জমা দিতে হবে ।
( ৮ ) কোনো সংবাদপত্র স্বাধীনভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে পারবে না ।
এইভাবে রাওলাট আইনের দ্বারা ভারতীয়দের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার পথ প্রশস্ত করা হয় ।