Class XI History, বারনীর ফাতাওয়া-ই-জহান্দারিতে রাষ্ট্রনীতি

 Class XI History 

        বারনীর ফাতাওয়া-ই-জহান্দারিতে রাষ্ট্রনীতি |



বারনীর ফাতাওয়া-ই-জহান্দারিতে রাজতন্ত্র এবং রাষ্ট্রনীতি সম্বন্ধে ধারণা কি ছিল, Class Eleven History Important Question.

প্রশ্ন- বারনীর ফাতাওয়া-ই-জহান্দারিতে রাজতন্ত্র এবং রাষ্ট্রনীতি সম্বন্ধে ধারণা কি ছিল ?

উত্তর- ‘ফতোয়া-ই-জাহান্দারি’ গ্রন্থে বারনীর উল্লিখিত রাষ্ট্রনীতি – ইতিহাসের বিষয়বস্তুর বিশ্লেষণ ও ইতিহাস দর্শন-চিন্তায় জিয়াউদ্দিন বরনি ছিলেন সুলতানি যুগের শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক।

তাঁর লেখা ফতোয়া-ই-জাহান্দারি হল সুলতানি যুগের রাষ্ট্রনীতি ও শাসননীতি বিষয়ক সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে তিনি সুলতানি আমলের রাষ্ট্রনীতি ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যেমন-

১. সুলতানের ধর্মীয় কর্তব্য বরনির মতে, সুলতানি আমলে ভারতীয় মুসলিমরা অনেক ক্ষেত্রেই ইসলামের মৌলিক আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন।

মুসলিমদের মধ্যে ইসলামের আদর্শ ও ভাবধারা ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে বরনি রাষ্ট্রশক্তির প্রয়োগ অর্থাৎ সুলতানের হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

ইসলামের আদর্শ সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য সুলতানের হাতে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব থাকা উচিত বলেও বরনি উল্লেখ করেছেন।

২. রাজকীয় মর্যাদা বরনির মতে রাজার সীমাহীন মর্যাদা, আড়ম্বর ও গৌরব প্রকাশের মাধ্যমে তাঁর ক্ষমতা সর্বাত্মক হতে পারে।

রাজার সামনে সভাসদদের নতজানু হওয়া, রাজার হস্ত ও পদ চুম্বন প্রভৃতি প্রথা দরবারে রাজাকে চালু রাখতে হবে।

৩. সুলতানের বংশকৌলীন্য  সর্বোচ্চ ক্ষমতার ব্যবহারকারী হিসেবে সম্রাটের বংশকৌলীন্য থাকা আবশ্যক বলে বরনি তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।

উচ্চ ও পরাক্রমশালী রাজবংশের বংশধর হিসেবে সম্রাট সম্পর্কে প্রজাদের মনে উচ্চ ধারণা তৈরি হয়।

৪. ন্যায়বিচার – বরনি বলেছেন যে, শাসকের প্রধান কর্তব্য হল বিচারব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা।

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা রাজার শাসননীতির প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।

ন্যায়বিচার বলতে তিনি সত্য, ন্যায় ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাকে বুঝিয়েছেন।

৫. রাষ্ট্রীয় আইন- বরনির উল্লেখযোগ্য অবদান হল তাঁর রাষ্ট্রীয় আইনের ধারণা।

তিনি তাঁর গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

তাঁর মতে,একজন শাসকের প্রধান উদ্দেশ্যই হল ইসলামি আইন অর্থাৎ শরিয়তের বিধান মেনে রাষ্ট্রের সফল পরিচালনা।

৬. রাজতন্ত্র বরনি তাঁর ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে চরম রাজতন্ত্রকে সমর্থন করেছেন।

তিনি রাজতন্ত্রকে একটি বংশানুক্রমিক প্রতিষ্ঠান বলে উল্লেখ করেছেন।

এজন্য তিনি শাসককে ‘জিলুল্লাহ’ বা ‘ঈশ্বরের ছায়া’ বলে অবিহিত করেছেন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.